বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ৪৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পলিত

» আওয়ামী যুবলীগের ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি)।আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনায় গণবভন থেকে ভার্চুয়ারি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন যারা ১৯৭৫ এর পর ক্ষমতা দখল করেছিল অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে তারা ক্ষমতাকে ভোগের বস্তু হিসেবে নিয়েছিল। আজকে জনগণের কাছে তাদের কোনো স্থান নেই এবং স্থান থাকবে না। কিন্তু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এ উপমহাদেশে একটি সংগঠন, সবচেয়ে প্রাচীন সংগঠন হিসেবে ঠিকে আছে। মুক্তিযুদ্ধের সময়ের যারা বাধা দিয়েছিলে তাদের দোসরদের চক্রান্ত স্বাধীন দেশেও অব্যাহত আছে। যুবলীগকে বলতে চাই,

জাতির পিতার সেই আদর্শ বুকে নিয়ে সংগঠন করতে হবে। তাহলেই এদেশে তরুণ সমাজের জন্য কাজ করা যাবে। তারুণ্য থেকেই যেন বিনিয়োগকারী সৃষ্টি হয়, তারুণ্য থেকেই যেন তাদের জ্ঞান তাদের মেধা দিয়ে এদেশ গড়ে তুলতে পারি। আর ভবিষ্যতে এদেশকে যেন এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। সেভাবে কর্মপরিকল্পনা নেয়া হয়েছে এবং তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে

১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক যুব কনভেনশনের মাধ্যমে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে।যা দেশের প্রথম ও সর্ববৃহৎ এই যুব সংগঠন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে তাঁর ভাগ্নে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক প্রথিতযশা সাংবাদিক শেখ ফজলুল হক মনি এই সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের আদলে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও শোষণমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে যুবসমাজকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হয়। গত চার দশকের বেশি সময় ধরে দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম ও হাজারো নেতাকর্মীর আত্মত্যাগের মাধ্যমে যুবলীগ আজ দেশের সর্ববৃহৎ যুব সংগঠনে পরিণত হয়েছে ।আওয়ামী যুবলীগের ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে যুবলীগের উদ্দেশে বলেন, শুধু বক্তৃতা-স্লোগান নয়, মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করতে হবে। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই। যেখানে একজন মানুষও ক্ষুধার্ত থাকবে না। দারিদ্র্য থাকবে না। যেটা ছিল জাতির পিতার স্বপ্ন।
সরকারের উন্নয়নের বিবরণ তুলে ধরে বলেন, ২১ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল, এরশাদ, জিয়া ও খালেদা জিয়া। প্রত্যেকে নিজেদের ভাগ্য নিয়ে ব্যস্ত ছিল। মানুষের জন্য কিছু করে নাই। আওয়ামী লীগই মানুষের জন্য কাজ করেছে, করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া বলেছিল, আওয়ামী লীগ ১০০ বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবে না। আমি নাকি বিরোধী দলের নেতাও হতে পারব না। এখন আমরা ক্ষমতায় আছি বলে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারছি। এ জন্য আমরা মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ। তাদেরই জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
যুবকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি সময় অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে যুবলীগ। দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। দুর্যোগ আসবে, যাবে। নিজেদের শক্ত থাকতে হবে। মানুষের পাশে থাকতে হবে। মানুষকেও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। করোনায় আমাদের জনগণ ঐক্যবদ্ধ ছিল।
তিনি বলেন, করোনায় যুবলীগ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। তারা খাদ্যসামগ্রী বিতরণ, চিকিৎসা সহায়তা, অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে রোগীবহন, লাশদাফন, কৃষকের ধানকাটা ও সবজি বাজারজাতকরণে সহায়তা ও এই শীতে কম্বল বিতরণ করেছে। এ জন্য আমি তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
আওয়ামী লীগ সভাপতি আরও বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কেউ গৃহহীন থাকবে না। এ জন্য আট লাখ মানুষকে ঘর করে দিচ্ছি। পরিকল্পনা করে এগিয়ে যাচ্ছি। সে অনুযায়ী কাজ করছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তরুণ সমাজের ব্যবসায় ও বিনিয়োগের ব্যবস্থা রেখেছি। সহজে তারা ঋণ নিতে পারে। তরুণদের ট্রেনিং দিলেই ভালো করবে। আমরা তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বনির্ভর করার চেষ্টা করছি। কারণ আমরা মনে করি, তারুণ্যই শক্তি।
তিনি বলেন, অপপ্রচারে মনোযোগ দেয়া যাবে না। এত কিছু শুনলে সামনে এগুনো যায় না। যখন করোনার ভ্যাকসিন আসছে। নানাজন নানা কথা বলেছে, আমরা কিন্তু কোনো দিকে তাকাইনি। অ্যাডভান্স করে দিছি। যাতে অনুমোদন হলে আমরাই প্রথমে টিকা পাই। পেয়েছিও। ৪০ বছরের ওপরে বয়সী ও মানুষের জন্য সবসময় কাজ করে এমন লোকদের আগে দিচ্ছি।


যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান খান নিখিলের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন যুবলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ হুমায়ুন, যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ প্রমুখ।যুবলীগের শীর্ষ নেতারাসহ সকাল ১০টায় ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন যুবলীগ এর ৪৮তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশ বিদেশের প্রতিটি ইউনিটে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল ১০টায় ধানমন্ডি বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ। সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে বনানী কবরস্থানে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানসহ ‘৭৫ এর ১৫ আগস্ট নিহত সব শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশ-বিদেশের প্রতিটি ইউনিটে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। যুবলীগের প্রতিটি ইউনিট বৃক্ষরোপন কর্মসূচি পালন করছে। এছাড়াও দুস্থদের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়