হালদার ভাঙ্গনরোধে ১শ ৫৭ কোটি টাকার প্রকল্প

এশিয়ার বিখ্যাত প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী ও ধুরুং খালের ফটিকছড়ি উপজেলায় ভাঙন প্রতিরোধে ১শ’ ৫৭ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। ইতিমধ্যে হালদা ও ধুরুং খালের দুই পাড়ে ভাঙনরোধে বেশির ভাগ অংশে বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে পাথরের সিসি ব্লক বসানো হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কাজ চলমানও রয়েছে।
জানা গেছে, ফটিকছড়ি-হাটহাজারী অংশে হালদা নদী ও ধুরুং খালের তীরে বেড়ি বাঁধ নির্মাণ করছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ৪৬ কিলোমিটার মাটির বেড়িবাঁধ ও ৯ দশমিক ১৫ কিলোমিটার সিসি ব্লকের বাঁধ নির্মাণ। এর মধ্যে হালদা নদীর ৩৮ স্থানে সিসি ব্লকের জন্য ১০৮ কোটি টাকা ও ধুরুং নদীর ১৩ স্থানের জন্য ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। হাটহাজারী-ফটিকছড়ি অংশে হালদায় ৪টি গুচ্ছ প্রকল্পে ও ফটিকছড়ির ধুরুং খালে একটি গুচ্ছ প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ চলছে। ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। চলতি বছরের জুনে শেষ হচ্ছে প্রকল্পের কাজ। ইতোমধ্যে ৬৫% কাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম অফিসে কর্মরত আরিফুর রহমান।
হালদা নদী ও ধুরুং খাল তীরবর্তী এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সমিতিরহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ নিশ্চিন্তাপুর ও হাজির ঘাটা, রোসাংগীরি ইউনিয়নের শীলের হাট, নাজিরহাট পৌরসভার ফরহাদাবাদ, কুম্ভারপাড় এলাকায় সিসি ব্লক স্থাপনের বেশ কিছু কাজ শেষ হয়েছে। ধুরং খালে ফটিকছড়ি পৌরসভা, সুন্দরপুর একখুলিয়া, পাইন্দংয়ের যোগিনাঘাটা, বেড়াজালী, কাঞ্চন নগর ইউপিতে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে বেড়িবাঁধ ও সিসি ব্লক স্থাপনের কাজ।
সুন্দররপুর ইউনিয়নের একখুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর রহমান সোহেল জানান, বছর পরে বছর ধরে হালদা নদী রাক্ষসী হয়ে তীরবর্তী বাসিন্দাদের স্মৃতিবিজড়িত বাপ-দাদার ভিটে মাটির শেষ চিহ্নটুকু বিলীন করেছে। বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সিসি ব্লক স্থাপনের কারণে নতুন আশায় বুক বেঁধেছি। এবার হলেও হালদার তীরবাসীরা উপকৃত হবে।
এদিকে উপজেলার রোসাংগীরি এলাকায় হালদা নদীর তীরবর্তী সিসি ব্লকের ওপর গড়ে উঠেছে পর্যটন এলাকা। যার সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছে হাজারো পর্যটক। সরকারি পৃষ্টপোষকতা পেলে হালদার পাড়কে কেন্দ্র করে অত্যাধুনিক একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা সম্ভব বলে মনে করছে স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী তয়ন কুমার ত্রিপুরা বলেন, হালদা নদী ও ধুরুং খালে বেড়িবাঁধ নির্মাণ, সিসি ব্লক স্থাপনের কাজ প্রায় ৬৫% শেষ হয়েছে। বাকি কাজ শেষ হলে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে হালদা, ধুরুং খালের ভাঙ্গনে এবং বন্যায় যে পরিমাণ ক্ষতি হয় দুই পাড়ের বাসিন্দাদের তা আর হবে না অনেকটা কমে যাবে।