আজ পবিত্র জুমাতুল বিদা (আখেরি জুমা)

আজ শুক্রবার পবিত্র জুমাতুল বিদা তথা মাহে রমজানের আখেরি জুমার দিন। আরবিতে ‘বিদা’ শব্দের অর্থ শেষ। জুমাতুল বিদা মানে শেষ শুক্রবার বা শেষ জুমা। পবিত্র মাহে রমজানের শেষ জুমার দিনটি মুসলিম বিশ্বে জুমাতুল বিদা নামে পরিচিত। ১৪৪২ হিজরির শেষ জুম্মাবার আজ।

জুমা নামাজ শেষে মসজিদে মসজিদে মুসল্লিরা বিশেষ দোয়া করে থাকেন। এছাড়া বিভিন্ন আমল ও নফল ইবাদতের মধ্যদিয়ে দিনটি পালন করা হয়। জুমার নামাজ শেষে মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে মুসলমানরা ক্ষমা ও রহমত কামনা করেন। আজ নামাজ শেষে মহামারি করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি চেয়ে আল্লাহর দরবারে বিশেষ মোনাজাত করা হবে।

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের কারণে এবারের জুমাতুল বিদার চিত্র হবে একেবারেই ভিন্ন। মসজিদে মুসল্লিরা জামাতে অংশ নিতে পারলেও তা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই করতে হবে। ইসলামে এ দিনের বিশেষ গুরুত্ব ও তাৎপর্য রয়েছে। এমনিতে জুমাবারের ফজিলত অত্যধিক; তদুপরি রহমত, মাগফিরাত শেষে পবিত্র রমজানের নাজাত দশকে আগত জুমাবারের গুরুত্ব ও মর্তাবা বহুগুণ বেড়েছে। জুমার গুরুত্ব সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন জুমার দিন নামাজের জন্য আজান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর যিক্র (সালাত) পানে দৌঁড়াও এবং ক্রয়-বিক্রয় পরিত্যাগ কর। এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে’।

জুমার ফজিলত সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘হযরত আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন, জুমার দিন যে জানাবাত হতে পবিত্র হওয়ার উদ্দেশ্যে গোসল করে এবং সবার আগে নামাজের জন্য গমন করে সে যেন একটি উট কুরবানী করলো, যে পরবর্তী ক্ষণে গমন করে সে যেন একটি গাভী কুরবানী করলো, যে তৃতীয়ক্ষণে গমন করে সে যেন একটি শিং বিশিষ্ট দুম্বা কুরবানী করলো, যে চতুর্থ নম্বরে গমন করে সে যেন একটি মুরগী কুরবানী করলো এবং যে পঞ্চম নম্বরে গমন করে সে যেন আল্লাহর পথে একটি ডিম দান করলো। অতঃপর ইমাম যখন খুতবা দেয়ার জন্য বের হন তখন ফেরেশতাগণ ‘যিক্ধসঢ়;র’ তথা ওয়াজ-নছীহত শোনার জন্য উপস্থিত হন’- (ছহীহ আল বুখারী)।

বিভিন্ন হাদীসের ভাষ্য মতে, জুমায় গমনের পূর্বে গোসল করা সুন্নাত। এছাড়া হাদীসে জুমার দিন বিশেষভাবে মিসওয়াক করে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন জামা-কাপড় পরিধানপূর্বক সুগন্ধি লাগিয়ে মসজিদে গমন করতে তাগিদ দেয়া হয়েছে। জুমআর দিনে সূরাতুল কাহাফ তিলাওয়াতের বিশেষ ফযিলত রয়েছে। রমজান মাসের এ আখেরি জুমায় দান-ছাদাকা করলে বহুগুণ সাওয়াব মিলবে। তাই জুমাতে আসতে যেতে ফকীর-মিসকীনদের আবেদনে সাড়া দেয়া রোজাদারদের জন্যে অত্যধিক ফলদায়ক কাজ হবে।

এক জুম‘আ থেকে আরেক জুম‘আ তার মধ্যবর্তী গুনাহসমূহের কাফ্ফারা হিসেবে বিবেচিত হয়।