প্রধানমন্ত্রীর,পায়রা সেতুর উদ্বোধনে স্বপ্ন পূরণ হলো দক্ষিণাঞ্চলবাসী
স্বপ্ন পূরণ হলো দক্ষিণাঞ্চলবাসীর। কুয়াকাটা যাওয়ার সহজ পথ স্বপ্নের পায়রা সেতু (লেবুখালী ব্রিজ) উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ রোববার সকাল ১১টার গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়েভার্চুয়াল প্লাটফর্মে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দৃষ্টিনন্দন এই সেতুটি উদ্বোধন করেন তিনি।এদিকে এই পায়রা সেতু উদ্বোধনকে ঘিরে আজ ভোর থেকেই সেতু এলাকায় উৎসবের আমেজ বইছে। শত শত লোক সেতুর দুই প্রান্তে অবস্থান করছেন এখনও। নানান রঙে সাজানো হয় সেতুটিকেপটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার লেবুখালী ইউনিয়নের পায়রা নদীর ওপর নির্মিত চার লেনবিশিষ্ট পায়রা সেতুর উদ্বোধনের মা্যমে ।
এদিকে এই পায়রা সেতু উদ্বোধনকে ঘিরে আজ ভোর থেকেই সেতু এলাকায় উৎসবের আমেজ বইছে। শত শত লোক সেতুর দুই প্রান্তে অবস্থান করছেন এখনও। নানান রঙে সাজানো হয় সেতুটিকেপটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার লেবুখালী ইউনিয়নের পায়রা নদীর ওপর নির্মিত চার লেনবিশিষ্ট পায়রা সেতুর উদ্বোধনের মা্যমে । গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে আজ রোববার সকাল ১১টার দিকে এই সেতুর উদ্বোধন করেন তিনি। সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা এই সেতুটির দ্বার উন্মুক্ত হওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন যাতায়াতের পথ খুলে যাচ্ছে। এ ছাড়া কুয়াকাটাসহ পুরো দক্ষিণ উপকূলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে দেশ এগিয়ে যাবে আরেক ধাপ। পায়রা সেতু এলাকায়। দৃষ্টিনন্দন এই সেতু দেখতে মানুষের ভিড় বাড়ছে । সন্ধ্যায় আলোয় ঝলমলে আলোকিত হয়ে উঠছে সেতুটি। পায়রা সেতু উন্মুক্ত হওয়ায় বরিশাল থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ফেরিবিহীন যান চলাচল শুরু হবে। পরবর্তী সময়ে পদ্মাসেতুর নির্মাণকাজ শেষ হলে ঢাকা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। পায়রা সমুদ্রবন্দর, তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র, পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটাসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষে আর্থসামাজিক উন্নয়নসহ দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে এই পায়রা সেতু। উদ্বোধন উপলক্ষে পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার লেবুখালী সেতু এলাকায় আয়োজন করা হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের। যেখানে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল বিভাগের সংসদ সদস্যসহ জনপ্রতিনিধিরা, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতারা।
পায়রা সেতু প্রকল্পের কর্মকর্তারা বলেন, এই সেতু নির্মাণের নকশা কিছুটা ব্যতিক্রমধর্মী। চার লেনবিশিষ্ট এই সেতুটি নির্মাণ হয়েছে ‘এক্সট্রাডোজড কেব্ল স্টেইড’ প্রযুক্তিতে। এক হাজার ৪৭০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৯ দশমিক ৭৬ মিটার প্রস্থের এই সেতু কেবল দিয়ে দুই পাশে সংযুক্ত রয়েছে। নদীর মাঝখানে একটি পিলার রয়েছে, এতে নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ ঠিক থাকবে। সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে এক হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা।২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পায়রা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন।ঢাকার সঙ্গে পটুয়াখালীসহ দক্ষিণাঞ্চলের নিবিড় যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের আরও উন্নতি ও অগ্রগতি হবে এবং পর্যটনশিল্পের বিকাশ ঘটবে। কক্সবাজারের চেয়েও দূরত্ব কমে আসবে সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটার। ঢাকা থেকে কুয়াকাটা পৌঁছতে সময় লাগবে মাত্র ছয় থেকে সাত ঘণ্টা। অপার সম্ভাবনার দ্বার খুলে যাচ্ছে কুয়াকাটা পর্যটনশিল্পের। ইতোমধ্যে দৃষ্টিনন্দন এ সেতুটি এখন একটি বিনোদনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ভ্রমণ পিপাসুদের পদচারণায় মুখর থাকে পায়রা সেতু এলাকার দুই প্রান্ত।
কুয়াকাটা-ঢাকা মহাসড়কের পটুয়াখালী জেলার দুমকি উপজেলার লেবুখালীতে পায়রা নদীর ওপর নির্মাণ হয়েছে এ সেতুটি। প্রকল্পে সেতুটির নামকরণ ‘পায়রা সেতু’, কিন্তু স্থানীয়ভাবে বলা হয় ‘লেবুখালী ব্রিজ’। ২০১৬ সালে পায়রা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে মূল সেতুর শতভাগ নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। ‘কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট’, ‘ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট’ এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ বিনিয়োগে প্রায় ১৫শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় সেতুটি। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘লংজিয়ান রোড অ্যান্ড ব্রিজ কনস্ট্রাকশন’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে। সৌরবিদ্যুতের আলোতে আলোকিত এখন দৃষ্টিনন্দন এই সেতুটি। চট্টগ্রামের কর্ণফুলী সেতুর আদলে ফোর লেনে নির্মিত এই সেতুর দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৪৭০ মিটার এবং প্রস্থ ১৯ দশমিক ৭৬ মিটার। ক্যাবল দিয়ে দুই পাশে সংযুক্ত করা হয়েছে সেতুটি। ফলে নদীর মাঝখানে একটি পিলার ব্যবহার করা হয়। আর পিলারের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও নিশ্চিত করা হয়েছে। এ ছাড়া খরস্রোতা পায়রা নদীর ভাঙন থেকে সেতু রক্ষায় পটুয়াখালী প্রান্তে ১ হাজার ৪৭৫ মিটার নদী শাসনের কাজও চলমান রয়েছে।