মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।বৃহস্পতিবার (৯ জুন) দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিকালে সংসদে এই বাজেট প্রস্তাব পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এটি তার চতুর্থ বাজেট।
সরকারের নতুন ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ভর্তুকি, প্রণোদনা ও নগদ ঋণ খাতকে। আগামী অর্থবছরে ভর্তুকি, প্রণোদনা ও নগদ ঋণ খাতে ব্যয় হবে ৮২ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১ দশমিক ৯০ শতাংশ। এরমধ্যে ভর্তুকি খাতে ৪২ হাজার ৪৫ কোটি, প্রণোদনা বাবদ ৩০ হাজার ৭০০ কোটি এবং নগদ ঋণ বাবদ ১০ হাজার কোটি টাকা থাকছে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল তার বাজেট বক্তৃতায় জানান, করোনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশে চাহিদাকৃত পণ্যের সরবরাহ সংকট তৈরি হয়েছে। সরকার মূল্যস্ফীতিকে সহনীয় মাত্রায় রাখতে অভ্যন্তরীণ কৃষি ও শিল্পে বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। এর জন্য কৃষকদের উৎসাহিত করতে কৃষিতে এবার রেকর্ড ১৫ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে।মন্ত্রী বলেন, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, সেচ ও বীজে প্রণোদনা, কৃষি পুনর্বাসন ও সারে ভর্তুকিতে এই টাকা ব্যয় করা হবে। এতে নগদ দেওয়া হবে আরও ১০ হাজার কোটি টাকা।প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে সব মিলিয়ে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৯৯ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা।
সরকারের এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে স্থানীয় সরকার বিভাগ ও পল্লী উন্নয়ন খাত মিলিয়ে বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে মোট ৪৪ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা। এর পরেই আছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, বরাদ্দ ২৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। বিদ্যুতে ২৪ হাজার ১৯৬ কোটি টাকা এবং জ্বালানিতে ১ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা উন্নয়ন বরাদ্দ রাখা হয়েছে।পণ্যমূল্য সহনীয় রাখতে এবং উৎপাদন খরচ কমাতে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি রাখা হচ্ছে ১৮ হাজার কোটি টাকা।
সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় ব্যয় করা হবে ১৯ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। বছরজুড়ে ব্যাপকভাবে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির (ওএমএস, ভিজিডি, ভিজিএফ, কাবিখা) মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি আয়ের সংস্থানে এই অর্থ ব্যয় করা হবে।মানবসম্পদ উন্নয়নে বরাদ্দ থাকছে ৭ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া অবসর ও পারিবারিক ভাতা, যেমন- বয়স্ক, বিধবা, অসচ্ছল, প্রতিবন্ধী, মাতৃত্বকালীন ভাতা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি খাতে ব্যয় হবে ২৭ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।
প্রতিবন্ধী, ট্রান্সজেন্ডার, বেদেসহ পিছিয়ে পড়া অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কল্যাণ এবং সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রসহ বিভিন্ন খাতে সামাজিক কল্যাণের বিভিন্ন তহবিলের মাধ্যমে বছরজুড়ে খরচ করা হবে মোট ৩৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।