শহিদ জননী জাহানারা ইমামের মৃত্যুবার্ষিকী

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক, বরেণ্য কথাশিল্পী শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ রবিবার।১৯৯৪ সালের এই দিনে তিনি দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে মারা যান।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষের কাছে জাহানারা ইমাম দেশপ্রেম, ত্যাগ ও সংগ্রামের এক অনন্য প্রেরণার উৎস হিসেবে আজও অবিস্মরণীয়।

১৯২৯ সালের ৩ মে অবিভক্ত বাংলার ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার সুন্দরপুরে জন্মগ্রহণ করেন জাহানারা ইমাম। তার ডাক নাম ছিল জুড়ু। মায়ের নাম সৈয়দা হামিদা বেগম। ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পিতা আবদুল আলীর তত্ত্বাবধানে তিনি রক্ষণশীলতার বাইরে এসে আধুনিক শিক্ষা শুরু করেন। স্বামী প্রকৌশলী শরীফ ইমামও তাকে লেখাপড়ায় অনুপ্রেরণা দিয়েছেন।
জাহানারা ইমাম ম্যাট্রিক পাস করেন ১৯৪২ সালে। ১৯৪৪ সালে রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে আইএ পাস করে ১৯৪৫ সালে কলকাতার লেডি ব্রাবোর্ন কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। বিএড পাস করার পর তিনি ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসেবে বাংলায় এমএ পাস করেন। তার কর্মজীবন শুরু হয় শিক্ষকতার মাধ্যমে। ১৯৫২ থেকে ১৯৬০ পর্যন্ত তিনি সিদ্ধেশ্বরী গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন। এর পর ফুলব্রাইট স্কলার হিসেবে তিনি আমেরিকা থেকে উচ্চশিক্ষা নিয়ে ১৯৬৬ সালে ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৬৮ সালে তা ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যোগ দেন।
সারাদেশের সব মুক্তিযোদ্ধার জননী হয়ে উঠেছিলেন তিনি। সবার কাছে পরিচিত হয়েছিলেন শহীদ জননী হিসেবে।মুক্তিযোদ্ধার গর্বিত মা, সাহিত্যিক ও সংগঠক এই মহীয়সী নারীর নেতৃত্বেই নব্বইয়ের দশকে গড়ে ওঠে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলন। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ব্যানারে করা সেই আন্দোলনের পথ ধরে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জড়িত বেশ কজন শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর বিচার সমাপ্ত হয়েছে।একাত্তরে একই সঙ্গে স্বামী ও সন্তানকে হারিয়েছিলেন শহীদ জননী জাহানারা ইমাম। জাহানারা ইমামের পরিবার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। তার ১৯ বছর বয়সী বড় ছেলে শাফী ইমাম রুমী আমেরিকায় ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ ত্যাগ করে দেশের ডাকে মৃত্যুভয়কে উপেক্ষা করে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। প্রিয়জনকে হারানোর সেই বেদনা তার ভেতর জ্বেলে দিয়েছিল দ্রোহের আগুন।

১৯৯২ সালের ২৬ মার্চ তার নেতৃত্বে গঠিত গণআদালতের মাধ্যমে একাত্তরের শীর্ষ নরঘাতক গোলাম আযমের প্রতীকী ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়। এরপর আমৃত্যু এই সংগ্রামী নারী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবিতে সোচ্চার ভূমিকা রেখেছেন। বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে তিনি মুক্তিযুদ্ধের মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় নিজেকে নিবেদিত করেন। যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকারদের বিচারে আনার জন্য তার প্রচেষ্টা ছিল অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য। মুক্তিযুদ্ধ সময়ের ডায়েরি ‘একাত্তরের দিনগুলি’ তার এক অনন্য সৃষ্টি।১৯৪৫ সালে কলকাতার লেডি ব্রাবোর্ন কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। বিএড পাস করার পর তিনি ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসেবে বাংলায় এমএ পাস করেন। তার কর্মজীবন শুরু হয় শিক্ষকতার মাধ্যমে। ১৯৫২ থেকে ১৯৬০ পর্যন্ত তিনি সিদ্ধেশ্বরী গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন। এর পর ফুলব্রাইট স্কলার হিসেবে তিনি আমেরিকা থেকে উচ্চশিক্ষা নিয়ে ১৯৬৬ সালে ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৬৮ সালে তা ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যোগ দেন।