দেশে ডলার সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য কমায় খোলাবাজারে বাড়ছে টাকার দাম। আকাশচুম্বী হয়ে ওঠা ডলারের দাম দিন দিন কমছে। তারপরও এখন ক্রেতা কম ডলারের।সাম্প্রতিক সময়ে হঠাৎ করেই ডলারের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংক থেকে পর্যাপ্ত ডলার পাননি গ্রাহকরা। তাই বাধ্য হয়েই খোলাবাজার থেকে ডলার কিনতে হতো তাদের। এই সুযোগকে কাজে লাগায় ডলার সিন্ডিকেট চক্র। হু হু করে বেড়েছে ডলারের দাম। খোলা বাজারের সিন্ডিকেটের ফাঁদে পা দিয়ে অনেকেই চড়া মূল্যে ডলার কেনেন।
বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে ডলারের চাহিদা বাড়ায় একটি চক্র তা নিয়ে কারসাজি করে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের বেশ কিছু পদক্ষেপের ফলে তাদের দৌরাত্ম্য শেষের পথে বলে মনে করছেন তারা।এদিকে, ডলার নিয়ে কারসাজিতে গড়ে ওঠা চক্রকে ধরতে তৎপর বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। তবে দালালদের দৌরাত্ম্য থামেনি। ক্রেতারা এক্সচেঞ্জ হাউজে যাওয়ার আগেই দালালচক্র তাদের ফাঁদে ফেলেন। বিভিন্ন প্রলোভনে তাদের কাছে ডলার বিক্রি করেন। অভিযোগ রয়েছে, দালালচক্রের সদস্যদের সঙ্গে এক্সচেঞ্জ হাউজের মালিক ও কর্মচারীদের সংযোগ রয়েছে।
খোলাবাজারে ডলারের লাগামহীন মূল্য নিয়ন্ত্রণে নানা উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরই মধ্যে মানি এক্সচেঞ্জ হাউজ ও ব্যাংকগুলোকে ডলার কেনাবেচার সীমা বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বুধবার (১৭ আগস্ট) মানি চেঞ্জারগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে প্রতি ডলারে সর্বোচ্চ দেড় টাকা মুনাফার সীমা ঠিক করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপরেই গত সপ্তাহে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া খোলা বাজারের ডলার নেমে এসেছে ১১০ থেকে ১১১ টাকায়।এক সপ্তাহের ব্যবধানে খোলাবাজারে ডলারের দাম কমেছে ১০ টাকা। ফলে বাড়ছে টাকার মান।
এদিকে দেশে ডলারের সংকট কাটাতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। আমদানিতে দেওয়া হয়েছে নানা শর্ত। রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে দেওয়া হয়েছে নীতিগত ছাড়।
এছাড়া ব্যাংক ও মানি চেঞ্জারগুলোর সঙ্গে বৈঠক করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। ডলার কারসাজিকারীদের ধরতে চলছে অভিযান। অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।
গত ১৪ আগস্ট কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকের সংগঠন বাফেদা বৈঠক করে। সেখানে বলা হয় ব্যাংকগুলো ডলার কেনা-বেচায় কত টাকা মুনাফা করবে তা তারা নিজেরাই ঠিক করবে। তবে বেচাকেনার মধ্যে পার্থক্য যেন এক টাকার বেশি না হয়।