শক্তিশালী কালবৈশাখী, ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার পূর্বাভাস

চলতি মে মাসে দেশের আবহাওয়ায় ব্যাপক পরিবর্তন দেখা যাবে। এ মাসে একদিকে আকস্মিক বন্যা, নিম্নচাপ, ঘূর্ণিঝড় ও শক্তিশালী কালবৈশাখী ঝড়ের আভাস রয়েছে। অন্যদিকে স্বাভাবিক অপেক্ষা কম বৃষ্টিপাত ও তীব্র দাবদাহও দেখা দিতে পারে।আগামী এক মাসের আবহাওয়ার আগাম পরিস্থিতি তুলে ধরতে আবহাওয়া অধিদপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

আবহাওয়াবিদরা জানান, প্রতি মাসের শুরুতে অধিদপ্তরের পরিচালকের সভাপতিত্বে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠক থেকেই চলতি মাসের দীর্ঘমেয়াদি আবহাওয়ার পূর্বাভাস তৈরি করা হয়। এর সাথে আগের মাসের একটি পর্যালোচনাও থাকে।

এপ্রিলে আবহাওয়ার বিভিন্ন তথ্য ও উপাত্ত পর্যালোচনাকালে পরিলক্ষিত হয় যে, সারাদেশে স্বাভাবিক অপেক্ষা কম (-৭৯ শতাংশ) বৃষ্টিপাত হয়েছে। পশ্চিমা ও পূবালী লঘুচাপের প্রভাব কম থাকায় স্বাভাবিক অপেক্ষা কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। চলতি মে মাসেও সারা দেশে স্বাভাবিক অপেক্ষা কিছুটা কম বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পশ্চিমা লঘুচাপের সঙ্গে পূবালী বায়ু প্রবাহের সংযোগে এবং বায়ুমণ্ডলের নিম্নস্তরে জলীয় বাষ্পের যোগান বাড়ায় ৪, ০৮, ১৬, ২১ ও ৩০ এপ্রিল সময়ে দমকা/ঝড়ো হাওয়া এবং বিজলী চমকানোসহ সিলেট, চট্টগ্রাম, ঢাকা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হয়। এ সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ওঠেছিল ২১ এপ্রিল ঢাকায়, ৮৩ কিমি।

পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় তাপীয় লঘুচাপ অবস্থান করায় ২০ ও ২৫ এপ্রিল রাজশাহী, যশোরে ও কুষ্টিয়াঅঞ্চলে তীব্র তাপ প্রবাহসহ ১-০৪, ১০-১৬, ১৯-২১, ২৩-৩০ এপ্রিল সময়ে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট, ঢাকা, রংপুর, ময়মনসিংহ ও রাজশাহী বিভাগের অনেকস্থানে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপ প্রবাহ (৩৬-৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বয়ে যায়। এ সময় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে ওঠেছিল ২৫ এপ্রিল যশোরে, ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- মে মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। আর দেশের উত্তর ও মধ্য অঞ্চলে দুই থেকে তিনদিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ মাঝারি অথবা তীব্র কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যেতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলে ৫ থেকে ৭ দিন বজ্রসহ শিলাবৃষ্টি ও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে।

এ মাসে দেশের পশ্চিমাঞ্চলে একটি তীব্র তাপপ্রবাহ (৪০ ডিগ্রির উপরে) এবং সারাদেশে ১-২ টি মৃদু (৩৬-৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) থেকে মাঝারি (৩৮-৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ধরনের তাপ প্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

অন্যদিকে, দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কতিপয় স্থানে ভারি বৃষ্টিপাতের পরিপ্রেক্ষিতে স্বল্পমেয়াদি আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। এ সময় দৈনিক গড় বাষ্পীভবন থাকবে ৪ দশমিক ২৫ থেকে ৫ দশমিক ২৫ মিলিমিটার। আর গড় উজ্জ্বল সূর্য কিরণকাল থাকবে ৬ দশমিক ৫ থেকে ৭ দশমিক ৫ ঘণ্টা।

কৃষি আবহাওয়ায় বলা হয়েছে, মে মাসে দৈনিক গড় বাষ্পীভবন ৪ দশমিক ২ মি.মি. থেকে ৫ দশমিক ২৫ মি.মি. এবং গড় উজ্জ্বল সূর্যকিরণকাল ৬ দশমিক ৫ থেকে ৭ দশমিক ৫ ঘণ্টার মধ্যে থাকতে পারে।

উল্লেখ্য, টানা দাবদাহের অবসান ঘটিয়ে রোববার (২ মে) রাতে রাজধানীতে নামে স্বস্তির বৃষ্টি। আবহাওয়া অফিস বলেছে, এটি অনেকটা মৃদু কালবৈশাখী।