কাজীর দেউরি শিশুপার্ক নামের জঞ্জাল অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন

পুরানো সার্কিট হাউসের সামনে থেকে শিশুপার্ক নামের জঞ্জাল অপসারণের দাবি জানিয়েছে নাগরিক উদ্যোগ। কাজীর দেউরি শিশুপার্কের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সমাজের বিভিন্ন পেশার নাগরিকের উপস্থিতিতে এ দাবি উত্থাপন করা হয়।এর আগে নভেম্বরে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পত্রিকাগুলো এই পার্কের নবায়ন চুক্তির বিরুদ্ধে অভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশ করে।নাগরিক উদ্যোগের কো-চেয়ারম্যান হাজী মোহাম্মদ ইলিয়াছের সভাপতিত্বে এবং সমন্বয়কারী মোরশেদ আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধন পূর্ব সমাবেশে বলা হয়, এই পার্ক রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দুটি স্থাপনার জন্য হুমকি। পার্কে ঢুকে দুর্বৃত্তরা সার্কিট হাউস ও পাঁচ তারকা হোটেল রেডিসন ব্লু লক্ষ্য করে নাশকতা ঘটাতে পারে। এ সার্কিট হাউসটি কেবল বাংলাদেশের অনন্য ঐতিহ্য নয়, এটি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অত্যাধুনিক স্থাপত্য। আর এর সামনে খোলা সবুজ চত্বরটি ছিল সেই ঐতিহ্যের অংশ। দেশে প্রথমবারের মত চট্টগ্রামের মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা যখন সূচনা হয় তখন এই চত্বরে নির্মিত হয়েছিল বিজয় মঞ্চ। সেই মঞ্চে সারাদেশ থেকে আসা রনাঙ্গণের মুক্তিযোদ্ধারা নতুন প্রজন্মের সামনে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতেন। এই মঞ্চেই চর্চা হতো মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস।সমাবেশে রাজনীতিবিদ আবুল হাসনাত বেলাল বলেন, ১৯৯১ সালে বেগম জিয়ার বিএনপি যখন জামায়াতের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসে, এই বিজয় মেলার কার্যক্রম তাদের গাত্রদাহ হচ্ছিল। স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত চক্রের ইন্ধনে বিএনপি’র তৎকালীন মেয়র মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বিজয় মঞ্চের আলোচনা বন্ধ করার মানষে শিশুপার্ক নামের জঞ্জালটি সৃষ্টি করে।সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন, সম্প্রতি চুক্তির ২৫ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পরিবেশবাদীসহ চট্টগ্রামের নাগরিকরা সবাই আবেদন করেছিলেন এই চুক্তি যেন আর বাড়ানো না হয়। কিন্তু কারো মতামতের তোয়াক্কা না করে আবারও মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। আগে শিশুপার্ক ঘিরে লোহার গ্রিল ছিল। এখন দেয়া হয়েছে অন্ধকারচ্ছন্ন সীমানা প্রাচীর। এজন্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার শ্রেষ্ঠ স্থাপত্য পুরাতন সার্কিট হাউস বাইরে থেকে আর দেখার সুযোগ নাই।বক্তারা চসিকের নব নিযুক্ত প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ব্যক্তিগতভাবে জানেন মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা মঞ্চের আলোচনা বন্ধ করার জন্য শিশু পার্ক নামক এই জঞ্জাল বানিয়েছিলো বিএনপি। এই জঞ্জাল সরিয়ে ফেলুন। অপ্রয়োজনীয় এই আত্মঘাতি চুক্তি বাতিল করুন। এটি এখন সময়ের দাবী। চট্টগ্রামবাসী আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে।উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সালের ২৮শে নভেম্ব^র থেকে সু-বিশাল চত্বরটি ২৫ বছরের জন্য ইজারা দেয়া হয়েছিল ভায়া মিডিয়া সার্ভিসেস নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে। গত বছরের ২৭ শে নভেম্ব^র এই ইজারার মেয়াদ শেষ হয়। দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামের বিভিন্ন মহল থেকে দাবী তোলা হয়েছিল শিশুপার্কের ইজারা যেন আর বাড়ানো না হয়। আগের সবুজ উদ্যানটি যেন আবারও ফিরিয়ে আনা হয়। কিন্তু সম্প্রতি আবারো ১৫ বছরের জন্য একই প্রতিষ্ঠানের কাছে ৩ একর আয়তনের এই জায়গাটি নামমাত্র ভাড়ায় ইজারা নবায়ন করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।