আজ বুধবার (০৫ মে)করোনা মহামারীর প্রথম ধাপের সময়টিতে ইউরোপের আমদানি সরবরাহ শৃঙ্খলে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটে গিয়েছে বলে জানিয়েছে ইউরোপিয় ইউনিয়ন (ইইউ)।এ অবস্থায় ‘কৌশলগত নির্ভরতার’ পণ্যগুলো ভালোভাবে যাচাই করার খতিয়ে দেখার প্রয়োজন মনে করছে ব্লকটি। এসব নির্ভরশীল পণ্যগুলোর একটি বড় অংশ চীন থেকে আমদানি করা হয়। বার্তা সংস্থা ব্লুমবার্গের হাতে পৌঁছানো এ বিষয়ক ইইউর একটি খসড়া নথিতে এ তথ্য প্রকাশ হয়েছে।
ইইউর এই নথিতে বলা হয়েছে, ইইউর দেশগুলো আমদানির মোট মূল্যমানের ছয় শতাংশ বা প্রায় ১৩৭টি পণ্যের ওপর ‘অতিমাত্রায় নির্ভরশীল’। এই পণ্যগুলো মূলত জ্বালানী-সংবেদনশীল শিল্পসমূহে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের কাঁচামাল ও রাসায়নিক; এছাড়া এরমধ্যে নানা ধরনের সক্রিয় ফার্মাসিটিক্যল উপাদান এবং স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্ট পণ্যও রয়েছে।
এখানে আরো বলা হয়েছে, ‘এসব নির্ভরশীল আমদানি পণ্যের অর্ধেকরই উৎস চীনে। নাম উল্লেখ না করলেও নথিতে বলা হয়েছে এরমধ্যে ৩৪টি পণ্য কম সম্ভাবনার কারণে আরো দূর্বল অবস্থানে রয়েছে। খসড়া নথিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে এসব পণ্যের প্রায় ২০টিই কাঁচামাল ও রাসায়নিক পদার্থ যা জ্বালানী শিল্পে ব্যবহৃত হয়। আর তালিকায় থাকা বাদবাকি পণ্যগুলো ফার্মাসিটিক্যল ও স্বাস্থ্যখাত সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পণ্য তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রবাহ ঠিক রাখার পাশাপাশি ইউরোপের কোম্পানিগুলো ‘অন্যায় বাণিজ্য চর্চা এবং বৈদেশিক ভর্তুকির’ বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে। ঠিক এমন একটা অবস্থায় এই বিশ্লেষণের মাধ্যমে আরো স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে চীনের সঙ্গে ইইউর সম্পর্কে টানাটান উত্তেজনা চলছে। উল্লেখ্য, এই খসড়াটি এখনো পরিবর্তিত হতে পারে এবং আগামি সপ্তাহ নাগাদ তা চূড়ান্ত হবে।
নথিটিতে আরো বলা হয়েছে, ‘আমাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র ও সহযোগি দেশগুলোকে সঙ্গে শক্তিশালী ও আরো বহুমুখি বিকল্প সরবরাহ শৃঙ্খল’ তৈরির বিষয়ে ভাবছে ইইউ। ভবিষ্যতের সংকট মোকাবিলায় এবং পরিবেশবান্ধব ও ডিজিটাল উত্তরণের জন্য একক বাজারকে আরো সুজজ্জিত করতে নথিতে বিস্তারিত পরিকল্পনা প্রকাশ করা হয়েছে।
বিশ্ববাজারে বড় বড় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে ইন্ডাস্ট্রিয়াল চ্যাম্পিয়ন গড়ে তোলার লক্ষ্যপূরণে সহায়তার জন্য ইউরোপের শক্তিশালী দুইদেশ ফ্রান্স এবং জার্মানি নতুন নীতিমালা প্রণয়নের জন্য ইইউকে চাপ দিচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় চীনের প্রতি ইইউর মনোভাব ক্রমে কঠিন হয়ে উঠেছে। অন্যদেশগুলোকে ইউরোপিয় কোম্পানি ক্রয়ে নিরুৎসাহিত করতে জরিমানা ও চুক্তি আটকে দেয়ার জন্য আগামি সপ্তাহে নতুন নীতিমালা প্রস্তাব উত্থাপন করবে ব্লকটির নির্বাহি শাখা ইউরোপিয় কমিশন (ইসি)।