মায়ের কবরে চিরনিদ্রায় মাসুদ রানার স্রষ্টা কাজী আনোয়ার হোসেন

মায়ের কবরে চিরনিদ্রায় মাসুদ রানার স্রষ্টা কাজী আনোয়ার হোসেন
মাসুদ রানা। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যেকোনো ষড়যন্ত্র রুখে দেয় সারা বিশ্বে। কিন্তু তাঁর স্রষ্টা কাজী আনোয়ার হোসেন বড়ই নিভৃতচারী। দেশের রহস্য-রোমাঞ্চ সাহিত্যের এই পথিকৃৎ, ভিন্ন ধারার প্রকাশনার সফল উদ্যোক্তা চিরবিদায় নিলেনও নিভৃতেই। গতকাল বুধবার ৮৫ বছর বয়সে ইন্তেকালের পর আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বনানীর কবরস্থানে মা সাজেদা খাতুনের কবরে তাঁকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। কাজী আনোয়ার হোসেনের শেষ ইচ্ছা ছিল মার কবরেই থাকবেন তিনি। বাদ জোহর সেগুনবাগিচার কাঁচাবাজার মসজিদে কাজী আনোয়ার হোসেনের জানাজার অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বনানী গোরস্থানে তাঁকে মায়ের কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। বন্ধু গীতিকার মাসুদ করিমের নামের প্রথম অংশ ও আর নিজের প্রিয় ঐতিহাসিক চরিত্র রানা প্রতাপের নামের প্রথম অংশ মিলিয়ে ‘মাসুদ রানা’ নামটি তৈরি করেন কাজী আনোয়ার হোসেন। ‘মাসুদ রানা’র প্রথম দিকের বইগুলোর প্রকাশক ছিলেন কাজী আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী ফরিদা ইয়াসমিন। ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের প্রথম বই প্রকাশিত হয় ১৯৬৬ সালে। কাহিনি সাজাতে ১৯৬৫ সালে মোটরসাইকেলে করে চট্টগ্রাম, কাপ্তাই ও রাঙামাটি ঘুরে আসেন কাজী আনোয়ার হোসেন। এরপর সাত মাস সময় নিয়ে লিখলেন ধ্বংস পাহাড়। পরের বই ভারত নাট্যমও মৌলিক রচনা। তৃতীয় বই স্বর্ণমৃগ থেকে বিদেশি কাহিনির ছায়া অবলম্বনে শুরু হয় ‘মাসুদ রানা’ লেখা। এখনো তা-ই চলছে। প্রথম দুটি বইয়ের বাইরে আর একটা মৌলিক ‘মাসুদ রানা’ লিখেছিলেন, নাম পিশাচ দ্বীপ। ‘মাসুদ রানা’র কাহিনি সংগ্রহ করা হয় ইয়ান ফ্লেমিং, অ্যালিস্টেয়ার ম্যাকলিন, জেমস হেডলি চেজ, রবার্ট লুডলাম, ফ্রেডরিক ফোরসাইথ, উইলবার স্মিথসহ অনেক লেখকের বই থেকে। মূল কাহিনির কাঠামোতে সংযোজন-বিয়োজন করে দাঁড় করানো হয় একেকটা নতুন ‘মাসুদ রানা’।