ইউপি নির্বাচনে সাতকানিয়ায় নৌকার জয় ভোটের মাঠে সহিংসতা

ইউপি নির্বাচনে সাতকানিয়ায় নৌকার জয় ভোটের মাঠে সহিংসতা
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সপ্তম ধাপে সাতকানিয়া উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোটারদের ভোট দিতে সরব উপস্থিতি দেখা গেছে।কয়েকটি কেন্দ্র ছাড়া অন্যান্য কেন্দ্রগুলোতে সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ হয়েছে।উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে নৌকা প্রতীকে ১২ জন ও স্বতন্ত্র ৪ জন প্রার্থী জয়ী হয়েছে। সাতকানিয়ার চেয়ারম্যান পদে বিজয়ীরা হলেন ; চরতি ইউনিয়নে মো. রুহুল্লাহ চৌধুরী (নৌকা), আমিলাইশে মোজাম্মেল হক চৌধুরী (স্বতন্ত্র), নলুয়ায় মো. লেয়াকত আলী (নৌকা), কালিয়াইশে হাফেজ আহমদ (নৌকা), ঢেমশায় মির্জা আসলাম সরওয়ার রিমন (স্বতন্ত্র), ধর্মপুরে নাছির উদ্দিন টিপু (নৌকা), বাজালিয়ায় তাপস কান্তি দত্ত (নৌকা), পশ্চিম ঢেমশায় রিদুয়ানুল ইসলাম সুমন (স্বতন্ত্র ), ছদাহায় মোরশেদুর রহমান (স্বতন্ত্র), সোনাকানিয়ায় জসিম উদ্দিন (নৌকা)। খাগরিয়া ইউপিতে নৌকা প্রতীকের মো. আকতার হোসেন, কাঞ্চনায় নৌকা প্রতীকের রমজান আলী জয়ী হয়েছেন। এছাড়া চারজন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। তারা হলেন; কেওঁচিয়া ইউনিয়নে ওচমান আলী (নৌকা), পুরানগড়ে আ.ফ.ম. মাহবুবুল হক সিকদার (নৌকা) মাদার্শায় আবু নঈম মোহাম্মদ সেলিম (নৌকা) ও সাতকানিয়া সদরে মোহাম্মদ সেলিম (নৌকা)।

বেশকয়কটি কেন্দ্রের বাইরে দুইপক্ষের মধ্যে বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটে।নির্বাচনে কেন্দ্র দখলে হামলা-পাল্টা হামলা গুলাগুলির মধ্যদিয়ে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন পরিষদের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়।উপজেলার আমিলাইষ, কালিয়াইশ, মাদার্শা, কেঁওচিয়া, পুরানগড়, চরতী, সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নে সুষ্ঠু ভোট হলেও খাগরিয়া, বাজালিয়া, কাঞ্চনা ও সোনাকানিয়ার পরিস্থিতি ছিল উত্তপ্ত। এসব ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া, গোলাগুলি, ব্যালটে জোরপূর্বক সীল দেয়ার ঘটনা ঘটে।সপ্তম ধাপে সাতকানিয়া ইউনিয়ন, ছদাহা, পুরানগড়, বাজালিয়া, ধর্মপুর, কালিয়াইশ, কেঁওচিয়া, ঢেমশা, মাদার্শা, আমিলাইশ, কাঞ্চনা, নলুয়া, খাগরিয়া, চরতি, পশ্চিম ঢেমশা ও সোনাকানিয়া ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সাতকানিয়ায় পশ্চিম সহিংসতাপূর্ণ কেন্দ্রগুলো পরিদর্শনে যান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
প্রশাসন বলছে বিচ্ছিন্ন ও বিক্ষিপ্ত কয়েকটি ঘটনা ছাড়া অনেকটা শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা সহনশীল আচরণ করলে ভোটগ্রহণ আরো সুন্দরভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হতো।এতে সহিংসতায় নিহত হয়েছে শিশুসহ ২ জন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন।
এর মধ্যে নলুয়ার ঘটনাটি ঘটে দুপুরে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মরফলা বোর্ড কেন্দ্রের বাইরে। সেখানে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে তাসিফ নামে ১৩ বছরের এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়।
সকাল ১০টার দিকে বাজালিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে আব্দুশ শুক্কুর নামে ৩৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়
নলুয়ায় মারা যাওয়া তাসিফ সাতকানিয়া উপজেলার নলুয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ মরফলা গ্রামের মো. জসিম উদ্দিনের ছেলে আর এম এন উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেণিরছাত্র। ভোট চলাকালে বেলা ১২টার সময় অর্তকিত হামলায় বহিরাগত কিছুলোক ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে। দোহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সকালে খাগড়িয়া ইউনিয়নের গণিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও খাগরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কেন্দ্রের বাইরে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির পর ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক জানিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের প্রার্থী আকতার হোসেন এবং মোটরসাইকেল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী জসীম উদ্দিনের সমর্থকরা সকাল সাড়ে ৯টার দিকে লাঠিসোটা নিয়ে দুই কেন্দ্রের বাইরে জড়ো হয়। ওই দুই কেন্দ্রের মধ্যে দূরত্ব কয়েকশ গজ।
এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলি শুরু হয়। এ সময় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং ভোটাররা কেন্দ্র ছেড়ে সরে যাওয়ার চেষ্টা করেন।কাঞ্চনায় ভোট শুরু হওয়ার পর থেকে একাধিক কেন্দ্রে দফায় দফায় সংর্ঘষ হয়েছে।