কিংবদন্তী গায়ক গজল সম্রাট জগজিৎ সিংয়ের জন্মদিন আজ
কাবুল দত্ত ডেক্সপ্রতিবেদনঃ গজল গায়ক, সুরস্রষ্টা, সংগীত পরিচালক জগজিৎ সিং ১৯৪১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ব্রিটিশ ভারতের বিকানীর রাজ্য শ্রীনগরে জন্মগ্রহণ করেন। তার জন্মগত নাম জগমোহন সিং। বাবা অমর সিং এবং মা বচন কাউরের ১১ সন্তানের মধ্যে জগজিৎ ছিলেন তৃতীয়। তিনি শ্রী গঙ্গানগরের খালসা উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। বিজ্ঞান বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন ডিগ্রী অর্জন করে সরকারী মহাবিদ্যালয়, শ্রী গঙ্গানগর অধ্যয়ন করেন এবং কলা বিভাগে ডিএভি কলেজ, জলন্ধর থেকে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। অতঃপর স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন হরিয়ানার কুরুক্ষেত্র বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। যার সুরের ইন্দ্রজাল ছড়িয়ে রয়েছে বিশ্বময়। উপমহাদেশের প্রখ্যাত গজলশিল্পী জগজিৎ সিং যিনি “গজল-সম্রাট” নামেই বহুল পরিচিত। গজলে নিপুণতার জন্যে শ্রোতারা তাকে ‘গজল সম্রাট’ নামে অভিহিত করতেন। তার স্ত্রী চিত্রাকে সঙ্গে নিয়ে জগজিৎ সিং ভারতে গজলের পুনর্জাগরণ সৃষ্টি করেছেন বলে মনে করা হয়। গজল ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের একটি জটিল ধারা। সিং গজলের সঙ্গে “গীত” ধারার মিশ্রণ ঘটিয়ে এই ধারাটিকে সরল করে তোলেন। এরই ফলে গজল পুনরায় জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বাণিজ্যিক দিক থেকেও তিনি ছিলেন একজন সফল গজল শিল্পী। প্রায় পাঁচ-দশকব্যাপী সংগীতজীবনে তিনি ৮০টি অ্যালবাম প্রকাশ করেন। মৃত্যুর আগে বাংলাদেশে এসে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তার কণ্ঠে গাওয়া বেদনা মধুর হয়ে যায়, নদীতে তুফান এলে কূল ভেঙে যায়, চোখে চোখ রেখে আমি সুরা পান করিনি, বুঝিনি তো আমি পৃথিবীতে ভালবাসা সবচেয়ে দামি, তোমার চুল বাঁধা দেখতে দেখতে- জনপ্রিয় রোমান্টিক ধাঁচের বাংলা গানগুলো গেয়ে এ দেশের শ্রোতাদেরও মুগ্ধ করেছেন গজলসম্রাট। আজ গজল সম্রাটের ৭৩তম জন্মদিন। জন্মদিনে গজল সম্রাটকে ফুলেল শুভেচ্ছা।জগজিৎ সিং সঙ্গীতের সাথে যুক্ত ছিলেন শৈশবকাল থেকেই। গঙ্গানগরের পণ্ডিত চাগনলাল শর্ম্মা’র কাছে দু’বছর সঙ্গীতশাস্ত্রে শিক্ষালাভ করেন। এরপর ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অন্যতম ধারা – খেয়াল, ঠুমরী, ধ্রুপদ শিখেন উস্তাদ জামাল খানের ‘সাইনিয়া ঘরানা বিদ্যালয়’ থেকে। ১৯৬৫ সালে জগজিৎ গায়ক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে মুম্বাইয়ে চলে যান। শুরুতেই তাকে বিরূপ পরিবেশ ও কঠিন পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হয়। প্রস্তুতি-পর্বে নিজেকে যোগ্যতা প্রমাণ ও যাচাইয়ের মুখোমুখিও হতে হয়েছে অনেকবার। সেজন্যে প্রয়োজনে তাকে পেয়িং গেস্ট হিসেবে থাকতে হয়েছে। এখানে তিনি বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেল ও পার্টিতে গান গাওয়া শুরু করেন।
জগজিৎ সিং (জন্মঃ- ৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪১ – মৃত্যুঃ- ১০ অক্টোবর, ২০১১)
১৯৭০ ও ১৯৮০-এর দশকে জগজিৎ এবং চিত্রা সিং ভারতীয় সংগীত জগতে প্রায় একই সঙ্গে খ্যাতনামা হয়ে ওঠেন। তাঁদের দুজনকে আধুনিক গজল সংগীতের পথপ্রদর্শক মনে করা হয়। ভারতের ফিল্মি গানের ধারার বাইরে থেকেও তাঁরা ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী। অর্থ (১৯৮২) ও সাথ সাথ ছবিতে ব্যবহৃত তাঁদের গাওয়া গজলের সংকলন এইচএমভি থেকে প্রকাশিত হয়; এটি ছিল তাঁদের সর্বাধিক বিক্রীত অ্যালবাম। লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে তিনি প্রকাশ করেন সাজদা(১৯৯১) অ্যালবামটি। তিনি পাঞ্জাবি, হিন্দি, উর্দু, বাংলা, গুজরাটি, সিন্ধি ও নেপালি ভাষাতেও গান গেয়েছিলেন। ২০০৩ সালে সংগীত ও সংস্কৃতি জগতে অবদানের জন্য তাঁকে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান পদ্মভূষণ দিয়ে সম্মানিত করা হয়। গজল ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের একটি জটিল ধারা। সিং গজলের সঙ্গে “গীত” ধারার মিশ্রণ ঘটিয়ে এই ধারাটিকে সরল করে তোলেন। এরই ফলে গজল পুনরায় জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। প্রেম গীত (১৯৮১), অর্থ ও সাথ সাথ (১৯৮২) চলচ্চিত্রে এবং টিভিসিরিয়াল মির্জা গালিব (১৯৮৮) ও কহকশান (১৯৯১)-এ গজল গেয়ে তিনি জনপ্রিয়তা পান। বাণিজ্যিক দিক থেকেও তিনি ছিলেন একজন সফল গজল শিল্পী। প্রায় পাঁচ-দশকব্যাপী সংগীতজীবনে তিনি ৮০টি অ্যালবাম প্রকাশ করেন। তাঁর নয়ি দিশা (১৯৯৯) ও সমবেদনা(২০০২) ছিল ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিশিষ্ট হিন্দি কবি অটলবিহারী বাজপেয়ীর লেখা গানের সংকলন।
জগজিৎ ও চিত্রা সিং প্রথম ভারতীয় সুরস্রষ্টা যিনি ডিজিটাল মাল্টি-ট্র্যাক রেকর্ডিং পদ্ধতিতে গান রেকর্ড করেন। এই পদ্ধতিতে রেকর্ড করা তাঁদের প্রথম অ্যালবামটি ছিল বিয়ন্ড টাইম(১৯৮৭)। রবিশঙ্কর ও অন্যান্য সংগীতশিল্পী ও সাহিত্যিকদের সঙ্গে তিনি ভারতীয় শিল্প ও সংস্কৃতির রাজনীতিকরণের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন। শাস্ত্রীয় ও লোকশিল্পীদের তিনি নানাভাবে সাহায্য করতেন। মুম্বইয়ের সেন্ট মেরি স্কুলের লাইব্রেরি নির্মাণ, বম্বে হসপিটাল গঠন এবং ক্রাই, সে