৭ মার্চের এই ভাষণ এখনও আমাদের অনুপ্রেরণা দেয়-প্রধানমন্ত্রী

৭ মার্চের এই ভাষণ এখনও আমাদের অনুপ্রেরণা দেয়-প্রধানমন্ত্রী
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণের প্রতিটি লাইন এখনও বাঙালি জাতিকে অনুপ্রেরণা দেয় বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সোমবার ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপন অনুষ্ঠানে বলেন পৃথিবীর ইতিহাসে স্বাধীনতার জন্য যত ভাষণ দেওয়া হয়েছে। কোনোটাই কিন্তু পুনরাবৃত্তি হয়নি কখনও। যেদিনের ভাষণ, সেদিনই ওইটা শেষ হয়ে গেছে। এই ভাষণটা আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের ৫০ বছর পর্যন্ত আমাদের বারবার প্রেরণা দিয়ে যাচ্ছে।

তিনি একথা বলেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। বক্তব্য শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন প্রধানমন্ত্রী। একটি মাত্র ভাষণ, এটা কত ঘণ্টা, কত দিন বাজানো হয়েছে। এটা মনে হয় হিসাব করাটা একটা কঠিন ব্যাপার। এটাকে যুগ যুগ ধরে আমরা শুনছি। কত কোটি কোটি মানুষ এই ভাষণটা শুনেছে। যতই বাধা দেওয়া হয়েছে, ততই মনেহয় এই ভাষণটা উদ্ভাসিত হয়েছে। এখনও আমাদের এই ভাষণ অনুপ্রেরণা দেয়।৭ মার্চের ভাষণের প্রতিটি লাইনকে কবিতার অংশ মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যা মানুষের ভেতরে, অন্তরে অন্যরকম অনুভূতি এনে দেয়, প্রেরণা দেয়। এই ভাষণের যে ঐতিহাসিক কথা, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম’ একাত্তর সালে যখন মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেছিল তখন এই ভাষণটাই ছিল তাঁদের প্রেরণা। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে নিয়মিত তা বাজানো হতো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে বিশ্বের অনেকই গবেষণা করেছিল। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে স্বাধীনভাবে বাজানোর সুযোগ পায়। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা থেমে থাকেনি। পঁচাত্তরের পরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই ভাষণটা বারবার বাজিয়েছে। সরকার প্রধান বলেন, জাতির পিতা ভাষণ শেষ করেছিলেন জয় বাংলা বলে। মানে হলো বাঙালির জয়, বাংলার মানুষের জয়। জয় বাংলা স্লোগানটা, প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধা যখনই যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, শত্রুকে আঘাত করতে গেছে। তখনই এই স্লোগানটা দিয়েই ঝাঁপিয়ে পড়েছে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে যারা বন্দি হয়েছে, দিনের পর দিন নির্যাতনের শিকার হয়েছে, এই স্লোগান দেওয়ার জন্য। কিন্তু মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই স্লোগানটাই দিয়ে গেছেন।

তিনি বলেন, একটি জাতির জীবনের এতবড় আত্মত্যাগ এক সময় মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল। আমার আত্মবিশ্বাস আর কোনোদিন কেউ এই ইতিহাস মুছে ফেলতে পারবে না। এটা একটা চিরন্তন ভাষণ হিসেবে বিশ্বের বুকে উদ্ভাসিত থাকবে।

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর।