প্রধানমন্ত্রীর সফরের অর্জনে বিএনপির গাত্রদাহ শুরু

প্রধানমন্ত্রীর জাপান, আমেরিকা ও যুক্তরাজ্য সফরের অর্জনে বিএনপি নেতাদের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। তাদের হতাশা এবং গাত্রদাহ থেকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মিথ্যাচারের অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছেন।তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ শুক্রবার (৫ মে) বিকালে চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রের মাল্টিপারপাস ভবনের ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের জন্য সফরে গিয়েছেন। জাপান আমাদেরকে বিভিন্ন প্রকল্পে ৩০ বিলিয়ন ইয়েন সহায়তার চুক্তি করেছে। যে বিশ্বব্যাংক আমাদের পদ্মা সেতু থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল, সেই বিশ্বব্যাংক তাদের ভুল উপলব্ধি করে প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ওয়াশিংটনে নিয়ে গেছে, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে তারা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে এবং ২ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।’

সে অর্জনগুলো নিয়ে বিএনপি মানুষের কাছে বিকৃতভাবে কেন মিথ্যাচার করছে সেটিই আমার প্রশ্ন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম সাহেবদের অনুরোধ জানাবো, দেশের জন্য শেখ হাসিনা যে সাহায্য-সহযোগিতা এবং সম্মান বয়ে এনেছেন সেজন্য তারাও সম্মানিত বোধ করতে পারেন।’‘আইএমএফ প্রধান আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বলেছেন- বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতির জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্ব প্রয়োজন। তিনি শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। এগুলো দেখে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবের গাত্রদাহ হচ্ছে, সেজন্য তিনি মিথ্যাচার করছেন। তিনি তার মিথ্যাচারের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছেন।’

ফ্রান্সভিত্তিক সংগঠন রিপোর্টার্স স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্সের প্রতিবেদন বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আফগানিস্তানে যেখানে মেয়েরা স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারে না, যে আফগানিস্তানে কেউ কথাই বলতে পারে না, সেটার নিচে বাংলাদেশকে দেখিয়েছে তারা। এতেই তো প্রমাণিত হয় এই রিপোর্টটি একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভুয়া এবং গাঁজাখুরী গল্প ছাড়া অন্য কিছু নয়।
এই সংগঠন শেখ হাসিনার ছবি বিকৃত করে তাদের প্রচ্ছদ এবং আপত্তিকর ক্যাপশন দিয়েছিল। সেটার পরিপ্রেক্ষিতে ফ্রান্সের আদালতে মামলা হয়েছে।’

চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রকে ঐতিহাসিক বর্ণনা করে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু গ্রেপ্তার হবার পূর্বমুহূর্তে তার স্বাধীনতার ঘোষণা এই চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রে পাঠ করে প্রথম শুনিয়েছিলেন তৎকালীন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ হান্নান। চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে ২৬ মার্চ সারাদিন এটি প্রচার করা হয়। পরে ২৭ মার্চ চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের নেতারা সিদ্ধান্ত নেন একজন সেনাবাহিনীর অফিসার দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাটি পাঠ করা প্রয়োজন। তখন প্রথমে ইপিআরের বীর উত্তম মেজর রফিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেছিলেন- আমি অ্যাম্বুশ নিয়ে আছি, সরে গেলে মুক্তিযুদ্ধের ক্ষতি হতে পারে। তিনিই জিয়াউর রহমানের খোঁজ দিয়েছিলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, মেজর রফিকের ‘লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে’ বইয়ে বিস্তারিত লিখা আছে। মেজর রফিক লিখেছেন- ‘২৫ মার্চ রাতে জিয়াউর রহমান সোয়াত জাহাজ থেকে পাকিস্তানিদের অস্ত্র খালাস করতে যাচ্ছিলেন। পথে বাধা পেয়ে তিনি ফেরত আসেন, পরে ২৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণাটি পাঠ করেন।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘অনেক ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে, যা চিরদিনের জন্য বন্ধ করার লক্ষ্যে সারাবিশ্বের আর্কাইভ থেকে তথ্য সংগ্রহের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছি। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা, এদেশের স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলন, স্বাধীনতা যুদ্ধ, সেগুলোর নানা দলিল সংরক্ষিত আছে। পৃথিবীর অন্যতম সেরা আর্কাইভ ব্রিটিশ পাথ থেকে ১৫৬ টি ডকুমেন্ট সংগ্রহ করার জন্য চুক্তি করেছি। যারা ইতিহাস বিকৃতি ঘটিয়েছে, তারা জানে না সারা পৃথিবীতে সত্য ইতিহাস সংরক্ষিত আছে। সেটা তো বিকৃত করা সম্ভব হয়নি। আমরা সেটিই সংগ্রহ করার উদ্যোগ নিয়েছি, চিরদিনের জন্য এই বিতর্ক কেউ যেন আর উপস্থাপন করতে না পারে।’