ব্রেকিং নিউজ » অক্টোবর থেকে চট্টগ্রাম নগরীতে স্বল্পমূল্যে স্বাস্থ্যসেবা শুরু

 
আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস ডেলিভারি প্রজেক্ট’ কার্যক্রম আবার চট্টগ্রাম নগরীতে শুরু হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় ১৫টি ওয়ার্ডে চসিকের স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে বিনামূল্যে ১৬ ধরনের স্বাস্থ্যসেবা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা স্বল্পমূল্যে গ্রহণ করতে পারবে নগরবাসী। পাশাপাশি মোট সেবা গ্রহীতার ৩০ শতাংশ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা পাবেন।
 
এছাড়াও স্বল্পমূল্যে ৩৮ ধরনের বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। এর মধ্যে মাত্র ৮০ থেকে ১০০ টাকায় টাইফয়েড, ৪০ থেকে ৮০ টাকা ব্লাড সুগার নির্ণয়, ৬০ থেকে ৮০ টাকায় জন্ডিস, ৩০ থেকে ৪০ টাকায় প্রস্রাব এবং ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় ইসিজি করা হবে। অথচ এসব পরীক্ষায় বেসরকারি ল্যাবে করতে হলে দ্বিগুণ–তিন গুণ ফি পরিশোধ করতে হয়। সব ঠিক থাকলে আগামী অক্টোবর মাস থেকেই প্রকল্পটির আওতায় স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন চসিক স্বাস্থ্য বিভাগ।সর্বপ্রথম ১৯৯৮ সালে আরবান হেলথ কেয়ার প্রকল্পের আওতায় অবকাঠামোগতভাবে নগরীতে পাঁচটি মাতৃসদন ও ৪৩টি নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়। পরবর্তীতে ২০০১ সালের জানুয়ারি থেকে এসব স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। এর মধ্যে চসিকের অধীনে ছিল ২টি মাতৃসদন ও ৩৬টি নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র। দুই মেয়াদে এ প্রকল্প শেষ হয় ২০১২ সালের ৩১ ডিসেম্বর। তৃতীয় মেয়াদে ওই প্রকল্প থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয় চসিক। তবে সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন নতুন করে ওই প্রকল্পের আওতায় নগরীতে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে উদ্যোগ নেন। এর অংশ হিসেবে প্রকল্পের চতুর্থ মেয়াদে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে চসিক।
 
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ‘আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস ডেলিভারি প্রজেক্ট’ প্রকল্পটি পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (সরকার ও এনজিও সমন্বয়ে বাস্তবায়িত) প্রকল্প। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ২০১৮ সালের ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ঋণচুক্তি, অনুদানচুক্তি ও প্রকল্প চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল। চসিক এ প্রকল্প চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল। চুক্তি অনুযায়ী এডিবি বাংলাদেশকে ১১২ মিলিয়ন ডলার সহায়তা করবে। এর মধ্যে ১১০ মিলিয়ন ডলার ঋণ হিসেবে, বাকি দুই মিলিয়ন ডলার হচ্ছে অনুদান।
 
চসিক স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায় , প্রকল্পের আওতায় সিটি করপোরেন তিনটি মাতৃসদন হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারি চার্জ নেয়া হবে এক হাজার টাকা থেকে ১৫শ টাকা। এবং সিজারে খরচ (ওষুধসহ সংশ্লিষ্ট সব ব্যয় মিলিয়ে) সেবাগ্রহীতাকে পরিশোধ করতে হবে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। যদিও বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে বর্তমানে নরমাল ডেলিভারিতে কমপক্ষে ১৫ হাজার টাকা এবং সিজারে ৩০ হাজার টাকার বেশি নেয়া হয়।
 
এছাড়াও বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবার মধ্যে মাত্র পাঁচ টাকায় পরিবার পরিকল্পনা উপকরণ এবং বিনামূল্যে জন্মনিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সেবা দেয়া হবে। মাত্র ৪০ থেকে ৫০ টাকায় মিলবে গর্ভকালীন সেবা, প্রসবকালীন সেবা, প্রসবুপরবর্তী সেবা, শিশুস্বাস্থ্য সেবা, কিশোর কিশোরীদের স্বাস্থ্যবিষয়ক সেব, পুষ্টি সংক্রমণ রোগ নিয়ন্ত্রণ, অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং সাধারণ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা। গতবকাল বুধবার বিকালে রাজধানীতে প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) এ বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।