ছয় দফা দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস আজ। দিনটি স্মরণে ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে দলের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানান আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তাঁর সঙ্গে দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা ছিলেন।
এরপর তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর মধ্যে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
১৯৬৬ সালের ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর এক সম্মেলনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে “৬ দফা দাবি” পেশ করেন। ১৯৬৬ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি লাহোর বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, এটি বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ। ১৫ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইউব খান ‘ছয়দফা’ প্রণয়ন কারীদের পাকিস্তানের শত্রু বলেন। ১৯৬৬ সালের ১৩ কিম্বা ১৮ মার্চ আওয়ামীলীগের কাউন্সিল অধিবেশনে এই ৬ দফা অনুমোদিত হয় এবং ২৩ মার্চ আনুষ্ঠানিক ভাবে ৬ দফা’ উত্থাপিত হয়।
৬ দফা কে ম্যাগনাকার্টার সাথে তুলনা করা হয়েছে। ছয় দফা নিম্নরুপ:::
ক) রাষ্ট্রের ধরন
খ)কেন্দ্রিয় সরকারের ক্ষমতা
গ) মুদ্রা সংক্রান্ত ক্ষমতা
ঘ) কর, শুল্ক, ধার্য ক্ষমতা
ঙ)আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষমতা
চ) আঞ্চলিক বাহিনী গঠন
৬ দফাকে কেন্দ্র করে ১৯৬৬ সালের প্রথম ৩ মাসে শেখ মুজিবুর রহমান ৮ বার গ্রেফতার হন। সর্বশেষ গ্রেফতার হন ৮ মে নারায়ণঞ্জের জনসভা শেষে। ৮ মে বঙ্গবন্ধুর সাথে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দও গ্রেফতার হন।
১৯৬৬ সালের ৭ই জুন ৬ দফা ঘিরে বাংলাদেশে ঘটে এক ঐতিহাসিক ঘটনা। যার ফলে প্রকাশ ঘটে এক বিপ্লবী চেতনার উন্মেষ। পূর্ব পাকিস্তানের গর্ভনর মোনায়েম খান ৬ দফা আন্দোলনকে রাষ্ট্রবিরোধী আন্দোলন বলে অভিহিত করে। এইদিনে রাজপথের তপ্ত বালুকাময় পথ রঞ্জিত হয়েছিল তেজগাঁওয়ের শ্রমিক শহীদ মনু মিয়া সহ ১১ জন শহীদের রক্তে।
স্বাধীনতার ঊষালগ্নের এই দিনে ৬ দফার আন্দোলনে যারা আত্মাহুতি দিয়েছিলেন তাদের স্মরণে রাখার জন্যই প্রতি বছরের ৭ই জুন, ৬ দফা দিবস পালিত হয়।এই দিনে আওয়ামী লীগের ডাকা হরতালে পুলিশ ও ইপিআরের গুলিতে টঙ্গী, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে মনু মিয়া, শফিক, শামসুল হকসহ ১০ জন শহীদ হন। এরপর আপসহীন সংগ্রামের ধারায় উনসত্তরের ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের দিকে এগিয়ে যায় বাঙালি জাতি। সামরিক শাসক আইয়ুব খানের পতন হয়।