“চট্টগ্রাম রেলওয়ে সিআরবি পাহাড়ের উনিশ শতকের মাঝামাঝিতে তৈরী পুরনো হাতির বাংলো৷”
হাতির আদলেও ভবন নির্মাণ করা যায়। বন্দর নগরী চট্টগ্রামেই আছে দৃষ্টিন্দন হাতি বাংলো। হাতির আদলে নগরীর সিআরবি এলাকায় নির্মাণ করা হয় ডুপ্লেক্স এ বাড়িটি। সাধারণ লোকজনের কাছে এটি ‘হাতি বাংলো’ নামে পরিচিত।
সিআরবি রেলওয়ে পুলিশ সুপারের বাংলোর পাশে হাতি বাংলোটির দুইপাশে দুইটি করে চারটি এবং সামনে এবং পেছনে তিনটি করে ছয়টি জানালা রয়েছে। জানালাগুলিও গোলাকার। বাংলোর সামনের দিকে হাতির সুরের মত যে বারান্দাটি রয়েছে সেটিতেও গোলাকার দুইটি ফুটো রয়েছে। যা দেখতে অনেকটা হাতির চোখের মত। ভবনটির নিচ তলায় দুইটি এবং উপরে একটি কক্ষ রয়েছে। প্রকৌশলী ব্রাউনজার উত্তরমুখী এই বাংলোতে থাকতেন। পরবর্তীতে ডরমেটরি হিসেবে ব্যবহার হত। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এটি এখন ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তবে পাহাড়ের উপর নির্মিত ভবনটির চারপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য সবাইকে মুগ্ধ করে। প্রকৃতি নিজের হাতেই ওই এলাকাকে সাজিয়ে দিয়েছে।
রেলওয়ের একাধিক অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে আলাপকালে জানা গেছে, আসাম বেঙ্গল রেলওয়ের সদর দপ্তর ছিল চট্টগ্রামে। ব্রহ্মপুত্র নদের পূর্বদিক এবং বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলসহ পুরো আসাম প্রদেশে রেললাইন স্থাপন করেছিল আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে। ১৮৯৩ সালে চট্টগ্রাম থেকে ফেনী পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণকাজ শুরু হয় বৃটিশ প্রকৌশলী ব্রাউনজারের অধীনে। ঊনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে এই বাংলোটি নির্মিত হয়। দৃষ্টিনন্দন এ বাংলো কালের বির্বতনে এখন বিবর্ণ, অনেকটা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। কালের সাক্ষী এই বাংলোটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রক্ষার উদ্যোগ নিলে এটি হয়তো পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় একটি থাকার স্থানে পরিণত হতো।
আলাপকালে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, এটি উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে নির্মাণ করা হয়েছে। এর নির্মাণ কাজে ফেরো সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। বাংলোটি সংস্কারের জন্য কর্তৃপক্ষ মৌখিক অনুমোদন দিয়েছে। শীঘ্রই এটির সংস্কার কাজ শুরু হবে। তবে অবকাঠামোগত কোন পরিবর্তন আনা হবে না একথা উল্লেখ করে বলেন, এটি সংস্কারের পর রেস্ট হাউজ হিসেবে ব্যবহার করা হবে। অতীতেও এটি রেস্ট হাউজ হিসেবে ব্যবহার হতো।