মেঘ আর বৃষ্টি নেই তবু জোয়ারের পানিতে প্রতিদিনই ডুবছে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম ও উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো। খাতুনগঞ্জ ও আগ্রাবাদের মতো বাণিজ্যিক এলাকা যেমন প্লাবিত হচ্ছে, একইভাবে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বেশ কয়েকটি উপজেলার ।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহা জানান, ‘পূর্ণিমার কারণে অতি জোয়ারে কর্ণফুলী, হালদাসহ শাখা নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া উত্তর পশ্চিম বঙ্গোসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় সৃষ্ট লঘুচাপ এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোসাগরে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় রয়েছে এবং বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য বিরাজ করছে।’ নদীবন্দরকে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।লঘুচাপের প্রভাব ও বাংলাদেশের ওপর মৌসুমি বায়ু সক্রিয়া থাকার কারণে সমুদ্র উত্তাল গতরাতে নগর বাণিজ্যিক এলাকা আগ্রাবাদ ও খাতুনগঞ্জসহ বেশকিছু এলাকা হাঁটুপানিতে তলিয়ে গেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন নগরবাসী।ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের সামনের রাস্তা, মা ও শিশু হাসপাতালের নিচতলা, জাম্বুরি মাঠের দুইপাশ পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন। পাশাপাশি দেশের সবচেয়ে বড় খাদ্যপণ্যের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ, পাথরঘাটা, আছাদগঞ্জ শুঁটকি পট্টি, রশিদ বিল্ডিং এলাকায়ও জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে।‘জোয়ারের সময় পানি আটকে দিতে চাক্তাই খালের মুখে একটি স্লুইস গেট বসানোর কাজ দুই বছর আগে শুরু করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। কিন্তু সে কাজ এখনো শেষ হয়নি। খালের মুখে বাঁধ দিয়ে কাজ চলছে। ফলে জোয়ারের পানি ঢুকলেও ভাটার সময়ে দ্রুত পানি সরে যেতে না পারায় পানিবদ্ধতা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। এ অবস্থায় ভারী বর্ষণ হলে পুরো চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ ও আছাদগঞ্জ তলিয়ে যায়।’একাধিক ব্যবসায়ী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, দেশের ব্যবসা বাণিজ্যের সিংহভাগ নিয়ন্ত্রিত হয় চাক্তাই খাতুনগঞ্জ থেকে। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এই জনপদ চরম অবহেলার শিকার। এই অবহেলা যত তাড়াতাড়ি বন্ধ হবে দেশ ততই উপকৃত হবে বলেও ব্যবসায়ীরা উল্লেখ করেন। তারা বলেন, চাক্তাই খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা কেবল চট্টগ্রামেই ব্যবসা করেন না। সারা দেশে করেন। এখান থেকেই সারাদেশের পণ্য সামগ্রির সরবরাহ ও বন্টন নিশ্চিত হয় বলেও তারা জানান। আর এই চেইন একবার ভেঙে গেলে পরিস্থিতি সামাল দেয়া কঠিন হবে বলেও ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন। তারা চাক্তাই খাতুনগঞ্জকে প্রতিদিন দুপুর এবং রাতে জোয়ারের পানিতে ডুবে যাওয়ার হাত থেকে উদ্ধার করার জন্য ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নেয়ারও দাবি জানিয়েছেন।