করোনাভাইরাসের কারণে ব্রিটেনের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি যে ভ্যাকসিনটি নিয়ে কাজ করছে, সেটির একটি ব্যাপক ট্রায়ালের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, ভ্যাকসিনটি শতকরা ৭০ ভাগ মানুষের মধ্যে কোভিড বাসা বাধতে দেয় না।ফাইজার ও মডার্না যখন দাবি করছে তাদের তৈরি ভ্যাকসিনের সাফল্য এক্ষেত্রে ৯৫%, তখন এই খবরটিকে একই সাথে হতাশাব্যঞ্জক এবং বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।অন্য টিকা দুটির তুলনায় অক্সফোর্ডের টিকাটি হবে অনেক সস্তা, সংরক্ষণ এবং দুনিয়ার প্রতিটি কোনায় কোনায় ছড়িয়ে দেয়া হবে অপেক্ষাকৃত সহজ।
সুতরাং নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ যদি এই টিকা অনুমোদন করে, সেটি মহামারি মোকাবেলার ক্ষেত্রে এই টিকাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
একই সাথে এমন তথ্যও পাওয়া যাচ্ছে যে ভ্যাকসিনটিকে আরো নিখুঁত করে তোলা গেলে এটিরও সাফল্যের হার বেড়ে ৯০ শতাংশে পৌঁছে যাবে। যুক্তরাজ্যের সরকার এর মধ্যেই অক্সফোর্ডের টিকার ১০ কোটির চাহিদা জানিয়েছে, যা দেশটির পাঁচ কোটি মানুষকে দেয়ার সুরক্ষা দেয়ার জন্য যথেষ্ট।
পরীক্ষায় কী দেখা গেছে?
যুক্তরাজ্য ও ব্রাজিল জুড়ে ২০ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবী অক্সফোর্ডের টিকার মানব পর্যায়ের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। গবেষকরা বলছেন, মানব পর্যায়ের পরীক্ষায় তারা ৭০ শতাংশ সফলতা দেখতে পেয়েছেন।
তবে কৌতূহলোদ্দীপক ব্যাপার হলো, স্বেচ্ছাসেবীদের একটি অংশের মধ্যে এই টিকার ৯০ শতাংশ সফলতা পাওয়া গেছে, যাদের প্রথমে টিকার অর্ধেক ডোজ দেয়া হয়, পরে বাকিটা দেয়া হয়েছিল।
কখন টিকা পাওয়া যাবে?
যুক্তরাজ্যের জন্য এর মধ্যেই ৪০ লাখ টিকা প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। আরও নয় কোটি ৬০ লাখ টিকার সরবরাহ বাকী রয়েছে। তবে যে কর্তৃপক্ষ টিকার নিরাপত্তার দিকগুলো, কার্যকারিতা এবং মাণের বিষয় তদারকি করে, সেই কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দেয়ার পরেই এই টিকার ব্যবহার শুরু করা যাবে।
তবে যুক্তরাজ্য একটি ব্যতিক্রমী ধরণের গণ টিকা কর্মসূচী শুরু করার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। সেজন্য সর্দিকাশি বা শিশুদের টিকা দেয়ার যে বার্ষিক কর্মসূচী পালন করা হয়ে থাকে, সেখানে কিছু কাটছাঁট করা হতে পারে।
বয়স্ক সেবা কেন্দ্রের বাসিন্দা আর কর্মীরা সবার আগে টিকা পাবেন। এরপরেই পাবেন স্বাস্থ্যকর্মী এবং ৮৫ বছর বয়সের ওপরের ব্যক্তিরা। এরপরে বয়সের ধাপ অনুযায়ী বাকি সবাই টিকা পাবেন।