মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের অংশ হিসেবে পেশাজীবী ও শ্রমিকরা গতকাল দেশজুড়ে ধর্মঘট পালন করেছে। রাজধানী নেপিডোতে পুলিশ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ব্যবহার করে এবং রাষ্ট্রীয় টিভিতে সতর্ক করে দেয়া হয় যে বিক্ষোভকারীরা জননিরাপত্তা ও আইনের শাসনের প্রতি হুমকি সৃষ্টি করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সামরিক অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে মিয়ানমারে শহরগুলোর রাস্তায় তিনদিন ধরে বিক্ষোভ হচ্ছে।
গতকাল সোমবার সকালে রাজধানী নেপিডো, ইয়াঙ্গন এবং মান্দালয় সহ নানা শহরে বহু লোক রাস্তায় নেমে আসে। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছিলেন সরকারি চাকুরে, শিক্ষক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইনজীবী ও ব্যাংক কর্মকর্তারা। ইন্টারনেটে কর্মচারিদের বিক্ষোভের প্রতীক হিসেবে কাজ না করার আহব্বান জানানো হয়। খবর বিবিসি বাংলা’র
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ডাক্তার বলেন, আমরা পেশাজীবীরা এটাই দেখাতে চেয়েছি যে একনায়কতন্ত্রের পতনের দাবিতে আমরা সবাই এক। একজন পোশাক শ্রমিক নিন তাজিন বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, আমাদের বেতন কেটে নেয়া হলেও আমরা কাজে যাচ্ছি না।
বিবিসির সংবাদদাতা জোনাথন হেড জানাচ্ছেন, গত কয়েকদিনের সমাবেশ অভ্যুত্থানবিরোধীদের আন্দোলনে গতিসঞ্চার করেছে- যদিও এখানে তেমন কোন নেতৃত্ব নেই। আপাতত এগুলোকে স্বতঃস্ফূর্ত এবং স্থানীয় ভাবে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশ বলেই মনে হচ্ছে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সাথে কি আচরণ করবে তা নিয়ে তাদের মধ্যে বিভ্রান্তি কাজ করছে বলে মনে হচ্ছে। পুলিশের চাইতে বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা অনেক বেশি।
সামরিক বাহিনী কী বলছে : সামরিক বাহিনী এখন পর্যন্ত সরাসরি কোন বক্তব্য দেয় নি। তবে তারা রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করছে এবং সোমবার তাতে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে একটি সতর্কবাণী প্রচার করা হয়। তবে সুনির্দিষ্ট কারো নামে এ সতর্কবাণী প্রচার করা হয়নি। দেশটির সামরিক কর্তৃপক্ষ তাদের দমনমূলক কর্মকান্ডের জন্য সুপরিচিত।
রবিবারের বিক্ষোভে লক্ষ লোকের সমাবেশ : গত রবিবার ইয়াঙ্গুন শহরে যে প্রতিবাদ-মিছিল বের হয়, তা ছিল গত এক দশকের মধ্যে বৃহত্তম। বিক্ষোভকারীরা গৃহবন্দী অং সান সু চি-র মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনর্বহালের দাবি করছে।