বীর মুক্তিযোদ্ধা একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেন্য অভিনেতা, এ টি এম শামসুজ্জামানের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির গভীর শোক

আজ শনিবার(২০ ফেব্রুয়ারি)বরেন্য অভিনেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা একুশে পদকপ্রাপ্ত
এটি এম শামসুজ্জামান না ফেরার দেশে চলে গেলেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করে।তাঁর অসাধারণ অভিনয়ের মধ্য দিয়ে দেশবাসীর হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ।আজ জনপ্রিয় এই অভিনয় শিল্পীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনপ্রিয় এই শিল্পী তাঁর অসাধারণ অভিনয়ের মধ্য দিয়ে দেশবাসীর হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন।’

প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

রূপালি পর্দার প্রখ্যাত অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান আজ শনিবার সকালে রাজধানীর পুরান ঢাকার সূত্রাপুরে নিজ বাসায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে পরিবার সূত্র জানিয়েছে।

এর আগে, শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে গতকাল শুক্রবার বিকালে এ টি এম শামসুজ্জামানকে হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়।

এর আগে গত বুধবার শ্বাসকষ্ট নিয়ে পুরান ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এ টি এম শামসুজ্জামানকে। ডা. আতাউর রহমান খানের তত্ত্বাবধানে তাঁর চিকিৎসা চলছিল।

এটিএম শামসুজ্জামান কয়েকদিন ধরে অন্যান্য স্বাস্থ্য জটিলতার পাশাপাশি শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, তাঁর অক্সিজেনের মাত্রা কমে গিয়েছিল। তবে গত বৃহস্পতিবার তাঁর সামগ্রিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়ায় অক্সিজেনের স্যাচুরেশন মাত্রা ৮৩ শতাংশ থেকে বেয়ে ৯৮ শতাংশে দাঁড়ায়। তাঁর সিটি স্ক্যানসহ অন্যান্য পরীক্ষার রিপোর্টগুলোও সন্তোষজনক পাওয়া গিয়েছিল বলে পরিবার জানায়।

আবু তাহের মোহাম্মদ (এ টি এম) শামসুজ্জামান ১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর দৌলতপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬১ সালে পরিচালক উদয়ন চৌধুরীর ‘বিষকন্যা’ সিনেমায় সহকারী পরিচালক হিসেবে প্রথম কাজ শুরু করেন।

অভিনেতা হিসেবে তার অভিষেক হয় ১৯৬৫ সালে। ১৯৭৬ সালে আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘নয়নমণি’ চলচ্চিত্রে খলনায়ক চরিত্রে অভিনয় করে তিনি আলোচনায় আসেন।

২০০৯ সালে ‘এবাদত’ সিনেমা দিয়ে পরিচালনায় অভিষেক হয় এটিএম শামসুজ্জামানের।

কিংবদন্তি এ কমেডিয়ান ও খল অভিনেতা ছয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। ১৯৮৭ সালে কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘দায়ী কে’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি। ১৯৯৯ সালে ‘ম্যাডাম ফুলি’ সিনেমায় কমেডিয়ান চরিত্রে, ২০০১ সালে ‘চুড়িওয়ালা’, ২০০৯ সালে ‘মন বসে না পড়ার টেবিলে’, ২০১২ সালে ‘চোরাবালি’ ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের জন্য এবং ২০১৭ সালে ৪২তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন এই অভিনেতা।

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতে অসামান্য অবদানের জন্য ২০১৫ সালে তিনি একুশে পদকে ভূষিত হন।

এক শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, এ টি এম শামসুজ্জামানের মৃত্যু দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। বাংলাদেশে অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিকাশে তার অবদান মানুষ শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।

রাষ্ট্রপতি মরহুম এ টি এম শামসুজ্জামানের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

দেশবরেণ্য এই অভিনেতার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

শ্বাসকষ্ট নিয়ে ক’দিন ধরেই ভুগছিলেন তিনি। গত পরশু রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালেও নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে শুক্রবারই বাসায় নিয়ে আসা হয় তাকে। শনিবার ভোরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এ টি এম শামসুজ্জামান।

এরআগে ২০১৮ ও ২০১৯ সালে কয়েক দফায় অসুস্থ হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন চলচ্চিত্রের এই কালজয়ী অভিনেতা। ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। সেসময় তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন।