আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান,রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশে বিএনপির এক নেতা দেশে আরেকটি ১৫ আগস্ট ঘটানোর যে ঈঙ্গিতপূর্ণ ও উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে দেশবাসী বিক্ষুব্ধ। এতে বিএনপির ফ্যাসিবাদী মানসিকতা, ষড়যন্ত্র এবং খুনের রাজনীতির চরিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
আজ ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবন থেকে নিয়মিত ব্রিফিংকালে এ কথা বলেন।
সেতুমন্ত্রী জানান, ওয়ার্কার্স পার্টির ফজলে হোসেন বাদশা এবং রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলেও বিএনপির পক্ষ থেকে এর কোনো সুস্পষ্ট বক্তব্য দেওয়া হয়নি। তাহলে কি ধরে নেব, এটি বিএনপির দলীয় বক্তব্য?
তিনি বলেন, আমাদের রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ বক্তব্য প্রত্যাহারের জন্য ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে। আমরা আবারও স্পষ্টভাবে জানতে চাই বিএনপি নেতার প্রকাশ্যে হুমকি, এটি তাদের দলীয় বক্তব্য কিনা এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতাদের অবস্থান জনগণ আশা করে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এক বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন সরকার নির্বাচিত নয়, জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে সরকারের পতন হবে। বিএনপি এসব হুমকি-ধামকি বছরের পর দিয়ে যাচ্ছে। বিএনপি’র আন্দোলন ও সরকার পতনের ঘোষণার ইতোমধ্যে যুগ পূর্তি হয়ে গেছে। কিন্তু জনগণ কোনো আন্দোলনে দেখতে পায়নি রাজপথে। নির্বাচনে তাদের কোনো সাফল্য নেই।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ক্ষমতায় থাকাকালে তারা সরকার পরিচালনায় একাধিক বিকল্প ক্ষমতাকেন্দ্র তৈরি করেছিল। এখনো তাদের আন্দোলনের ডাক আসে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ক্ষমতা কেন্দ্র থেকে। তাদের আন্দোলন ভাবনায় জনগণের কোনও ইস্যু নেই। আছে ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার উদগ্র বাসনা। বিএনপি ক্ষমতা ফিরে পেলে দেশকে আবারও সাম্প্রদায়িকতার নিকষ অন্ধকারে ডুবিয়ে দেবে। তাদের রাজনীতি বহু ধারায় বিভক্ত। আর এই বিভক্ত রাজনীতি জনগণের কল্যাণের চেয়ে হুমকি ডেকে আনবে।
ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে বিএনপির বিরোধিতার জবাবে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী কাদের বলেন, কোনো আইনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এর সুষ্ঠু ও যথাযথ প্রয়োগের ক্ষেত্রে কোনো ব্যত্যয় ঘটেছে কিনা। এ বিষয়টির দিকে সরকার কড়া নজর রাখছে। প্রযুক্তির এ বিশ্বে জনস্বার্থেই এ আইন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তাও প্রয়োজন। আইনের অপপ্রয়োগ যেন না হয় সে বিষয়ে উচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিএনপি আজ এ নিয়ে মানবাধিকারের কথা বলছে। সমালোচনা করছে। অথচ পঁচাত্তরে জাতির পিতাকে হত্যার পর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে খুনিদের বিচার চাওয়ার পথ বন্ধ করে দিয়েছিল তারা।
তিনি বলেন, পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে রক্ত মূল্যে অর্জিত সংবিধানকে কলঙ্কিত করেছে। অপারেশন ক্লিনহার্টে যাদের হত্যা করা হয়েছিল তাদের পরিবার যাতে বিচার চাইতে না পারে সে পথও বন্ধ করে করতে খুনিদের দায়মুক্তি দিয়েছিল সংসদে আইন পাসের মধ্য দিয়ে। অথচ আজ তারা আইনের শাসনের কথা বলে।
বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের সমালোচনা করে তাদের আরও বলেন, ফখরুল সাহেব কথায় কথায় বলেন সরকার নাকি অনির্বাচিত, জনগণ ভোট দেয়নি। আমি, আমরা প্রশ্ন রাখতে চাই আপনি নিজেও তো সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে আবার কোনও অদৃশ্য ইশারায় শপথ গ্রহণ করলেন না। অন্যদিকে আপনার দলের সাংসদরা সংসদে আছেন। তাদের কি আপনি এবং আপনার দলের প্রতিনিধিরা জালিয়াতির মাধ্যমে নির্বাচিত করেছিলেন? জনগণের ভোটে নির্বাচিত হননি? আপনাদের যেসব প্রার্থী পৌরসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছিল তারা কি ভোট ডাকাতি করে জয়ী হয়েছে? সত্য আড়াল করতে উট পাখির মতো মুখ লুকানো কি ঠিক হবে? বিএনপির বৈপরিত্যে ভরা স্বার্থান্বেষী রাজনীতির ষোল আনাই এখন জনগণের কাছে পরিষ্কার।