রোববার৩০ আগস্ট ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবস ও আশুরা উপলক্ষে আজ এক আলোচনা সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশে কার্যত কারবালার বিয়োগান্তক ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটে এবং জিয়াউর রহমান ছিলেন ওই হত্যাকান্ডের নেপথ্য খলনায়ক বলেএই মন্তব্য করেন।।দলভারী করার জন্য যারা এদিক সেদিক থেকে নেতাকর্মী টেনে আনছে তাদের কঠোর হুশিয়ারি বার্তা দেন আওয়ামী লীগ প্রধান, শেখ হাসিনা।তিনি বলেন, আমি শুরু থেকে বার বার নেতাকর্মীদের হুশিয়ার করেছিলাম এই ধরনের যারা বিশেষ করে মিলিটারি ডিকটেটরিদের হাতে তৈরি করা। এ সমস্ত রাজনৈতিক দল সেগুলো যারা করে এসেছে বা যুদ্ধাপরাধীদের সাথে যারা ছিল আমাদের দলে যেন তারা না আসে। কারণ তারা আসলে দলেরই ক্ষতি করে। অঘটন তারাই ঘটায় দলের ভাল ভাল নেতাকর্মীদের তারাই হত্যা করে, বাইরে বের হয় দলের কোন্দল। কিন্তু খুঁজলে দেখলে দেখা যাবে, তারা এখান থেকে সেখান থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসেছে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৫ আগস্ট হত্যাযজ্ঞ ও কারবালার বিয়োগান্তক ঘটনার মধ্যে বিস্ময়কর মিল রয়েছে। নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর দৌহিত্র ও মুসলমানদের ইমাম হযরত হোসেন (রা.)-কে কারবালায় হত্যা করা হয় আর ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।আওয়ামী লীগ সভানেত্রী আরো বলেন, কারবালার ঘটনায় নারী ও শিশুদের হত্যা করা হয়নি। কিন্তু বাংলাদেশের ওই ঘটনায় নারী-শিশুদেরও রেহাই দেয়া হয়নি।
তিনি বলেন, ১৫ আগস্টের কালরাতে বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে শিশু ও নারীদেরও গুলি করে হত্যা করা হয়। এছাড়াও, ওই রাতে মিন্টু রোডে তাঁর রাজনৈতিক সহকর্মী ও আত্মীয়দেরও হত্যা করা হয়।এ সময় প্রধানমন্ত্রী ইমাম হোসেন (রা.)-এর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, ‘হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসেন (রা.)-কে ৬৮০ সালের ১০ মুহররম কারবালার ময়দানে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। কারণ তিনি ন্যায়ের পথে ছিলেন।’সভার শুরুতে বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টের অন্যান্য শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গড়ার জন্য যখন সমস্ত কাজগুলো এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি তখন আসলো করোনাভাইরাস। এটা শুধু বাংলাদেশ নয় সারা বিশ্বব্যাপী। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের কারণে আজকে সব দেশই অর্থনীতি স্থবির। তারমধ্যেও আমরা আমাদের সীমিত সময়ে নিয়েও কাজ অব্যহত রাখতে পারছি। যে কারণে আমাদের রিজার্ভ ৩৯ মিলিয়নে উন্নীত হয়েছে।তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে অনেক দেশে যেখানে হাহাকার আমাদের দেশে সেরকম অবস্থা নেই। তারপরেও চিকিৎসার ব্যবস্থা যতটুক করার দরকার আমরা করে যাচ্ছি। করে যাব। প্রত্যেক জেলা হাসপাতাল থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যন্ত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করেছি। স্বাস্থ্য সচেতনতা যাতে সৃষ্টি হয় সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি। সকলকে মাস্ক পরে থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, স্বাস্থ্য সচেতন ভাবে চলুন। নিজেকে সুরক্ষা রাখা অন্যকে সুরক্ষিত রেখে এটা মেনেই চলতে হবে। এটা এমন একটা ভাইরাস যেটা কেউ দেখতে পায় না কিন্তু এর ফলে বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাদের চেষ্টা মৃত্যুর হার কমিয়ে আনা। সংক্রামকটা যাতে কমে তার ব্যবস্থা করা এবং মানুষের পাশে দাঁড়ানো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আমার নিজের জীবন উৎসর্গ করেছি দেশের মানুষের কল্যাণে একটাই লক্ষ্য বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলব। হয়তো প্রতিবন্ধকতা আছে এভাবেই চলতে হবে। আওয়ামী লীগ তো উজানে নাও ঠেলেই চলতে হয়। আমরা সেই প্রতিকূলতা অবস্থা মোকাবিলা করেই অভ্যস্ত কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের জন্য আমরা সব সময় যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত। যেভাবে জাতির পিতা রক্ত দিয়ে গেছেন। আমরাও রক্ত দিতে প্রস্তুত বাংলার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে। তিনি আমাদের মাঝে নেই তার নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল। স্বাধীনতার জন্য তিনি সংগ্রাম করেছেন তা মুছে ফেলেছিল ৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ ছিল।