চট্টগ্রামে ২০ ম্যাজিস্ট্রেটের অভিযানে ৩৩ মামলা

আজ রবিবার (৪ এপ্রিল)কোভিড-১৯ এর সাম্প্রতিক ঊর্ধ্বগতি বিবেচনায় সাধারণ মানুষকে সচেতন করে ঘরে ফেরাতে ফের মাঠে নেমেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ২০ জন ম্যাজিস্ট্রেট।আজ চট্টগ্রামের পুরো মহানগর জুড়ে দুপুর ১২টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত একযোগে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে এসব ম্যাজিস্ট্রেটগণ।দিনের টানা আড়াই ঘন্টার অভিযানে মাস্ক পরিধান না করা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলা ও বাসে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে অতিরিক্ত যাত্রি পরিবহনের অপরাধে মোট ৩৩টি মামলা করা হয়।
এসব মামলায় মোট নয় হাজার চারশ পঞ্চাশ জরিমানা আদায় করার পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে নির্দেশনা প্রদান করা হয় এবং চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫ হাজার পিস মাস্ক বিতরণ করা হয়।
পৃথক পৃথক অভিযানে নগরীর কর্ণফুলী ব্রীজ এলাকায় পরিচালিত অভিযানের নের্তৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজমা বিনতে আমিন। তার অভিযানে কোন মামলা হয়নি জানিয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৭০টি মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে জানান।
নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি মাজার, সেনানিবাসের গেইট মার্কেট, শের শাহ বাজার এলাকায় কোভিড-১৯ এর সচেতনতা তৈরিতে প্রচারণা ও মাস্ক বিতরণ করা হয়।
অন্যদিকে বাকলিয়া এলাকায় কোভিড-১৯ এর সচেতনতা তৈরিতে প্রচারণা ও মাস্ক বিতরণ করা হয়। বন্দর এলাকাতেও কোভিড-১৯ এর সচেতনতা তৈরিতে প্রচারণা ও ৫০ টি মাস্ক বিতরণ করা হয়। ওই এলাকায় ১ টি মামলায় ৫শ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
নগরীর বহাদ্দারহাট এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. সোহেল রানা। অভিযানে মাস্ক পরিধান না করায় ও অতিরিক্ত যাত্রি পরিবহনের জন্য ৩ ব্যক্তি ও ৮ যানবাহন চালকসহ মোট ১১ জনকে ২ হাজার ১শ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। তাছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক পরিধানের ব্যপারে জনসাধারণকে সচেতন করার পাশাপাশি একশত মাস্ক বিতরণ করা হয়।
পতেঙ্গা সার্কেল এসিল্যান্ড এহসান মুরাদ অভিযান পরিচালনা করেন নগরীর কাটগড় বাজার, পতেঙ্গা বীচ ও ইপিজেড এলাকায়। এ অভিযানেও কোন মামলা হয়নি। স্বাস্থবিধি পরিপালনের নিমিত্ত সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক প্রচারণা, ও মাস্ক বিতরন করা হয়।
জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এবং ভূমি অফিসের মহানগর সদর সার্কেলের মাসুমা জান্নাতের নের্তৃত্বে অভিযান চলে নগরীর মেহেদীবাগ এলাকায়।
এ অভিযানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলায় ২ মামলায় ২ জনকে ৬শ টাকা অর্থদন্ড দেওয়া হয়। এছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে নির্দেশনা প্রদান করা হয় এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫০টি মাস্ক বিতরণ করা হয়।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিল্লুর রহমান অভিযান পরিচালনা করেন নগরীর ২ নং গেইটের কর্ণফুলী মার্কেট এবং সংলগ্ন রাস্তায়। অভিযানে কোনরুপ দণ্ড প্রদান করা হয়নি। গণপরিবহনের চালক ও যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে সতর্ক করা হয়। ৫০টি মাস্ক বিতরণ করা হয়।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট গালিব চৌধুরী কর্তৃক নগরীর কাজির দেউড়ী সংলগ্ন এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে মাস্ক পরিধান না করায় তিনজন ব্যক্তিকে মোট ৫শ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। তাছাড়া ২জন বাসচালককে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করায় এক হাজার করে ২ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। এ অভিযানে একশত মাস্ক বিতরণ করা হয়।
নগরীর একে খান এলাকায় অভিযানের নের্তৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা আফরোজ। অভিযানে ১ জনের কাছ থেকে ২শ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। ১শ মাস্ক বিতরন করা হয়।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোনিয়া হকের নের্তৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয় নগরীর দেওয়ানহাট এলাকায়। অভিযানে কোন মামলা হয়নি। পঞ্চাশটি মাস্ক বিতরণ করা হয়।
নগরীর লালখান বাজার এলাকায় পরিচালিত অভিযানের নের্তৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্লাবন কুমার বিশ্বাস। এ অভিযানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলায় ৭ মামলায় ৭ জনকে ৮শ ৫০ টাকা অর্থদন্ড দেওয়া হয়।
এছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে নির্দেশনা প্রদান করা হয় এবং ৫০টি মাস্ক বিতরণ করা হয়।
তাছাড়া নগরীর সিআরবি, সার্কিট হাউজ সংলগ্ন স্টেডিয়াম মার্কেটে রবিবার দুপুর ১২টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হুছাইন মুহাম্মদ।
কোভিড-১৯ এর সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এ ধরনের অভিযান নিয়মিত পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছেন পৃথক পৃথক অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ।