আজ মঙ্গলবার( ২০ এপ্রিল )করোনা আক্রান্ত ২০ থেকে ২১ শতাংশ রোগীকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। গতবার এ হার ছিল অর্ধেক অর্থাৎ ১০ শতাংশ। আর প্রতি ১০০ জনে প্রায় ৭ জনের প্রয়োজন হচ্ছে হাইফ্লো অক্সিজেন কিংবা আইসিইউ সেবা। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট- আইইডিসিআরের গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।
বিশেষজ্ঞরা জানান,আরও সতর্ক না হলে করোনার তৃতীয় ঢেউ হবে বেশি বিপজ্জনক হতে পারে।করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এ সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়া পর্যালোচনা করেছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট আইইডিসিআর। তাদের গবেষণা বলেন,করোনার তীব্রতা বেড়েছে, তীব্রতার কারণে সংক্রমণ বাড়ছে।গত বছরের চেয়ে এবছর এপ্রিলে প্রতিদিন মৃত্যু ৫০ শতাংশ বেশি। আর যারা মারা গেছেন তাদের ৫২ শতাংশ হাসপাতালে ভর্তির পাঁচ দিনের মধ্যেই মারা গেছেন। বেড়েছে নারী রোগীর মৃত্যুর হারও। গত বছর প্রতি ৩২ মিনিটে ১ জন মারা গেলেও এবার প্রতি ১৬ মিনিটে একজন মারা যাচ্ছেন।
করোনা সংক্রান্ত জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এই কয়েকদিন আমরা যে মৃত্যুর হার দেখলাম, তা হলো হাসপাতালের অপ্রতুলতার কারণে। প্রধানমন্ত্রী জুন মাসে বলেছিলেন জেলা পর্যায়ে আইসিইউ এর ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু সেটাই আমরা পালন করিনি। ৩৬টা জেলাতে আইসিইউ ব্যবস্থা নেই। সেই জেলার লোক সব ঢাকায় চলে আসবে। এ জন্য রাজধানীতে খুব চাপ পড়ে গেছে।’
আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ‘সংক্রমিত হওয়ার তিন সপ্তাহের মধ্যে একজন মানুষের গুরুতর অবস্থা হয়ে যায়। তারা হয়তো দুই সপ্তাহ বাসায় কাটিয়েছেন, গুরুত্ব দেননি। তার পর পর হয়তো তারা হাসপাতালে এসেছেন।’
করোনা সংক্রমণের শুরুতে আক্রান্তের ১০ শতাংশ রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার দরকার হলেও এবার লাগছে শতকরা ২০ থেকে ২১ ভাগ রোগীর। ভর্তি রোগীদের মধ্যে শতকরা ৬ থেকে ৭ জনের হাইফ্লো অক্সিজেন কিংবা আইসিইউ সেবা প্রয়োজন হচ্ছে।
ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘যেসব সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে তার মধ্যে ৮০ শতাংশ সাউথ আফ্রিকান স্ট্রেইন্থ। এটা খুব র্যাপিডলি মানুষের কোষে যুক্ত হয়।’
ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ‘যারা হাসপাতালে আসছেন তাদের জন্য অক্সিজেন নিশ্চিত করার বিষয়টা আগের চেয়ে ভালো। তবে আরো দরকার।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার চলমান সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে হল ইদুল আযহা পর্যন্ত কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। এখন থেকে সার্বিক প্রস্তুতি না নিলে করোনার তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলা করা কঠিন হবে বলেও মনে করেন তারা।