নগরীর ‘মৃত’ বদরখালী খাল উদ্ধার

নগরীর লালদিঘির পাড় থেকে টেরিবাজার হয়ে কোরবানীগঞ্জ পর্যন্ত বদরখালী উদ্ধার করতে গিয়ে সবচেয়ে বড় কাপড়ের বাজার টেরিবাজারের সাতটি মার্কেটের প্রায় ৫৫টি দোকান ভেঙে উদ্ধার করা হয়েছে ‘মৃত’ বদরখালী খাল। ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় এই খাল উদ্ধার করেছে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন বিগ্রেড। তবে এই খাল উদ্ধার ও সেখানে কাজ করা অন্যতম এই চ্যালেঞ্জিং কাজ শেষ করে শর্তবর্ষী বদরখালী উদ্ধার ও পানি চলাচলের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে ১৩ থেকে ১৬ ফিট প্রশস্থ ড্রেন। যার উপর দিয়ে ছোট যান চলাচল করতে পারবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

লালদিঘির পাড় থেকে টেরিবাজার হয়ে কোরবানীগঞ্জ পর্যন্ত বদরখালী উদ্ধার করতে গিয়ে উচ্ছেদ করা হয়েছে প্রায় ৮০টি অবৈধ স্থাপনা। চাক্তাই খালের সাথে যুক্ত হওয়া বদরখালী খাল দখল করে নির্মিত হয়েছে বহুতল ভবনশত প্রায় শতাধিক স্থাপনা। ফলে চাক্তাই খাল থেকে বদরখালী খাল টেরিবাজার অংশে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যার কারণে এই এলাকায় সামান্য বৃষ্টি বা জোয়ারের পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতো।
সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন বিগ্রেড প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. শাহ আলী বলেন, জলাবদ্ধতা প্রকল্পে খাল উদ্ধার এবং খালে নেমে কাজ করতে হয় আমাদের। কিন্তু লালদিঘি থেকে টেরিবাজার পর্যন্ত বদরখালী খালের কোন অস্তিত্ব ছিল না। সম্পূর্ণরূপে এই খাল দখল করা হয়েছিল এবং খালের উপর রীতিমত ৭টি মার্কেট নির্মিত হয়েছিল। এসব মার্কেট ভেঙে আমরা খাল উদ্ধার করেছি। কিন্তু খালে নেমে কাজ করার মত সেখানে কোন পরিবেশ ছিল না। সেখানে কাজ করা আমাদের জন্য অনেকটা চ্যালেঞ্জিং ছিল। এছাড়া, এ খাল থেকে ৯টি বহুতল ভবন, ৫৫টি দোকান এবং ১৩টি দোকানের অংশ বা তলা উচ্ছেদ করা হয়েছে।লালদিঘি পাড়স্থ ওরিয়েন্ট টাওয়ারের পাশ থেকে শুরু হয়ে টেরিবাজারের মধ্যে দিয়ে গিয়ে কোরবাণীগঞ্জ হয়ে চাক্তাই খালের সাথে যুক্ত হয়েছে বদরখালী খাল। এই খালের আশপাশে এমনভাবে স্থাপনা করা হয়েছে, খালের ময়লা পরিষ্কারের কোন সুযোগ ছিল না। স্কেভেটর নামানোর কোন জায়গা ছিল না। এমনও হয়েছে, নিচে আমাদের লোকজন কাজ করছে, উপর থেকে তাদের মাথায় ময়লা ফেলছে।খালের উপর কালভার্ট নির্মাণ প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক বলেন, প্রতিটি খালের একপাশে ১৫ ফিট রাস্তা থাকার কথা, এই খালের পাশে এক ফিটও রাস্তা নেই। টেরিবাজার অংশে খাল সংকীর্ণ হওয়ায় এবং সেখানে ময়লা ফেলে পুনরায় ভরাট হতে পারে এমন আশঙ্কার ফলে সেখানে কালভার্ট নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। এই কালভার্ট দিয়ে ছোট গাড়ি ট্যাক্সি, রিকশা, মোটরসাইকেল চলাচল করতে পারবে। খালের উপর যেহেতু কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে, এখন ময়লা ফেলার কোন সুযোগও থাকছে না।